মণ্ডা মিঠাই
নতুনপাতা
নষ্ট প্রেত
------------------------
কৃশাশ্ব ভট্টাচার্য্য
------------------------
অজিত জন্ম থেকেই কিছু অলৌকিক শক্তির ব্যবহার করতে পারতো। ও লোকের আত্মার রং দেখতে পেত। ও শুধু আত্মার রং দেখেই খারাপ ভালো আলাদা করতে পারতো। এই বিষয়ে ওর জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই একটা জেদ চেপে বসে, যে করেই হোক এই খারাপ লোকেদের পৃথিবী থেকে দূর করতে হবে। বাবা-মা কে না জানিয়েই ও নিজের মতো আর কিছু ছেলে জোগাড় করে আর দল-বল গড়ে তোলে। যত বয়স বাড়ে ওদের, তত ওরা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে অজিত একটা বন্দুক জোগাড় করে ফেলে। বাকি দলের লোকেরা ওকে খারাপ আত্মার লোকেদের ঠিকানা এনে দিত আর অজিত তাদের সেই বন্দুক দিয়ে খুন করত। এত এত লোকের প্রাণ নিয়ে বন্দুকটি যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে, এখন আর আলাদা করে বন্ধুকে বুলেট ভরতে লাগে না এমনিই গুলি চলে।
অন্য দিকে অজিত লক্ষ করে যে, যত সময় যাচ্ছে ওর সঙ্গীরা তত খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ওদের আত্মার রং ক্রমশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। " না! ওরা এর চেয়ে বেশি খারাপ হয়ে গেলে নরকেও জায়গা হবে না। আমারই কিছু করতে হবে।"
একদিন অজিতের অনুরোধে এক নিস্তব্ধ এলাকায় ওরা সবাই উপস্থিত হল।
" কিন্তু অজিত কোথায় ?"
সবাই যখন অজিত এর খোজ করে তখন দূরে একটা বিল্ডিং -এ বসে অজিত লাল রঙের একটা বাটন বুড়ো আংগুল দিয়ে জোরে টিপে দেয়। এক বড় বিস্ফোরণের শব্দে ওই এলাকার সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
এরপর অজিত বাড়িতে এসে বিছানায় শুয়ে পড়ে। ওর লাল চোখ গুলো বড়ো বড়ো হয়ে যায়, হাসতে থাকে সে," কি আমার বন্ধুরা? তোমাদের নরকে যাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দিলাম যে আমি।"
অনেকক্ষণ পাগলামির পড়ে সে পাশে রাখা বন্দুকটি হাতে তুলে বলে," কি রে আমার বন্দুক? এবারে আমার কি করা উচিৎ?"
অজিতের কানে ফিশফিশে শব্দ এলো," আয়নার কাছে যাও..."
সে বলল," আয়না? কি আছে তাতে?"
অজিত যখন আয়নার কাছে গিয়ে দেখল, সে দেখতে পেল একটা কুৎসিত , গাঢ় রঙের নষ্ট হয়ে যাওয়া আত্মা দাঁড়িয়ে আছে ওর সামনে। অজিতের মাথার রাগে শিরা ফুলে যায়, সে তৎক্ষণাৎ বন্দুকটা হাতে নিয়ে আয়নায় গুলি চালালো। সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ল রক্তাক্ত কাচের টুকরো।
দ্বাদশ শ্রেণী
নাটাগড় স্বামী বিবেকানন্দ সেবা সমিতি বিদ্যালয়
নাটাগড়, উত্তর ২৪ পরগনা
কল্যাণ নগর, খড়দহ
Comments :0