পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধনে ‘এসআইআর’-র পদক্ষেপ বিচার করবে সুপ্রিম কোর্ট। তবে এখনই নয়। বিহারের বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআরআর সংক্রান্ত মামলার ফয়সালা হওয়ার পর।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে বিহারের এসআইআর সংক্রান্ত একাধিক আবেদনের শুনানি চলছে। আবেদনকারীরা ফের বলেছেন যে আজ পর্যন্ত সব ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ায় নতুন নাম যুক্ত হয়েছে। অন্যদিকে বাতিল হয়েছে ভুয়ো নাম। কিন্তু বিহারের এই প্রক্রিয়া ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য। মহিলা এবং দলিতদের নাম বেশি বাদ পড়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের পক্ষে প্রশান্ত ভূষণ বলেন যে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এক, তাড়াহুড়ো করে এই বিশেষ নিবিড় সংশোধন চাপিয়ে দেওয়ায় স্পষ্ট যে কমিশনের কোনও অভিসন্ধি রয়েছে। কারণ অতীতে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া সর্বদা হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে। এবার একতরফা নির্বাচন কমিশন সংশোধনীর বিজ্ঞপ্তি দিয়েই তা শুরু করেছে। দুই, আধার বা ভোটার কার্ডের মতো নিয়মিত ব্যবহারের নথি বৈধ ভোটার হিসেবে বিবেচনার তালিকায় না রাখা আসলে ছাঁটাইয়ের উদ্দেশ্যে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার শুনানিতে এই প্রসঙ্গে বিচারপতি সূর্য কান্ত মন্তব্য করেন যে আধারের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রমাণ করা যায় না। আধার আইনে ৬ নম্বর ধারাতেই তা স্পষ্ট করা আছে। এদিন প্রশান্ত ভূষণ বলেন, নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারে তো নাগরিকত্ব পরীক্ষার করার বিষয় নেই। নাগরিকত্বের প্রমাণ কমিশন চাইবে কেন। ২০০৩ সালে বিহারে নিবিড় সংশোধনী বা ‘আইআর’ হয়েছিল। তখন কাউকে নাগরিকত্ব প্রমাণের নথি দাখিল করতে বলা হয়নি। চাপের মুখে কমিশন এখন বলছে যে বাবা এবং মায়ে নাম ২০০৩’র ভোটার তালিকায় থাকলে সন্তানদের কেবল কার্ড নম্বর উল্লেখ করলেই চলবে। অন্য নথি দিতে হবে না।
ভূষণ বলেন যে কমিশনের অস্বচ্ছতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। একদিকে বলা হচ্ছে খসড়া তালিকায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ দেোয়া হয়েছে। আদালতে এই তালিকা দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলাম। সুপ্রিম কোর্ট তালিকা দিতে বললেও কমিশন তাতে রাজি নয় কেন। অথচ এই তালিকা তো কমিশনের হাতে থাকার কথা।
ভূষণের অভিযোগ, রাহুল গান্ধী সাংবাদিক সম্মেলনে ভোটচুরির তথ্য দেওয়ার পর বিহারের প্রক্রিয়ায় খসড়া তালিকায় নাম খোঁজার বা ‘সার্চ অপশন’ বাদ দেওয়া হয়েছে।
এদিন আবার রাহুল বিহারের এমন একাধিক ভোটারের সঙ্গে চা-পানের আড্ডায় মিলিত হয়েছে যাঁদের মৃত বলে বাদ দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণন পশ্চিমবঙ্গের তরফে এদিন আবেদন জমা দেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টে বলেন যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছে যে রাজ্য বিশেষ নিবিড় সংশোধনের জন্য তৈরি। কিন্তু এসআইআর নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও কথা বলেনি কমিশন।
বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মামলা পরেও শোনা যাবে। ওই রাজ্যে এখনই কিছু শুরু হচ্ছে না। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং সূর্যকান্তের বেঞ্চে চলছে শুনানি।
SIR West Bengal
পশ্চিমবঙ্গে ‘এসআইআর’ শুনানি হবে পরে, বিহার মামলায় বলল সুপ্রিম কোর্ট

×
Comments :0