শঙ্কর ঘোষাল
কৃষিতে কর্পোরেট পুঁজিকে মদত দিচ্ছে মোদী ও মমতা। এরা কেউই কৃষক দরদী নয়। তাই দুই সরকারের নীতির কারনে বিপন্ন কৃষি, বিপন্ন কৃষক ও বিপন্ন স্বদেশ। তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার বার্তাই দেওয়া হবে পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার ৩৮তম রাজ্য সম্মেলন থেকে।মঙ্গলবার এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্ধমানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে লোগো প্রকাশ করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে ছিলেন প্রাদেশিক কৃষকসভার সম্পাদক অমল হালদার, কৃষক নেতা সৈয়দ হোসেন, সমর ঘোষ, সুকুল সিকদার সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
এবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার ৩৮তম রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বর্ধমান শহরে। ৭-৯ নভেম্বর এই রাজ্য সম্মেলনকে সফল করতে জেলা জুড়ে প্রচার, কর্মসূচী ও কাজ শুরু হয়েছে। এদিন শুরুতেই গাঁজায় ২১০ জনের বেশি সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদ করে তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। কমরেড মদন ঘোষ নগর, কমরেড রণজিৎ মিত্র মঞ্চ ও কমরেড উদয় শঙ্কর সরকার কক্ষে বর্ধমান রবীন্দ্র ভবনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রকাশ্য সমাবেশ হবে উৎসব ময়দানে। এই সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন সর্বভারতীয় কৃষক নেতা অমরা রাম ও হান্নান মোল্লা। এছাড়াও বর্ধমান টাউন হলে অতীত কৃষক সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে প্রদর্শনী ও ১০টি নানা বিষয় নিয়ে সেমিনার হবে। অসংখ্য স্বাস্থ্য শিবিরও হবে।
অমল হালদার এদিন বলেছেন, "ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংগ্রহের মধ্য দিয়ে সম্মেলন করা হবে। সব বাড়িতে যাবেন কৃষক কর্মী ও নেতারা। সাথে হ্যান্ডবিল দেওয়া হবে বিপন্ন কৃষি, বিপন্ন কৃষ ও বিপন্ন স্বদেশ সেই কথা নিয়ে। লড়াই আন্দোলনের বার্তাও দেবেন কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে। এদিন হালদার বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে যে মিথ্যা ভাষন দিয়ে গেছেন তা উল্লেখ করে তিনি বলেন আমাদের রাজ্য এখন ধান উৎপাদনে প্রথম নয়, চতুর্থ। অথচ মুখ্যমন্ত্রী অসত্য বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বলেন ধান উৎপাদনে রাজ্য নাকি প্রথম। অমল হালদার এদিন বলেছেন, বামফ্রন্টের সময়ে ধান উৎপাদনে রাজ্য প্রথম ছিল কিন্তু কৃষিক্ষেত্রে ক্রমশ পিছিয়য়ে পড়ছে রাজ্য। রাজ্য ক্রমশ খাদ্য সংকটের দিকে এগিয়ে চলেছে।
এদিন কৃষকসভার নেতৃবৃন্দ বলেছেন বহু আন্দোলনের ঐতিহ্য আছে এই জেলায়। তাঁরা বলেন যে পেটের খিদে, যুক্তিবোধকে ভুলিয়ে জাতপাত, ধর্মের আবেগে ভাসিয়ে দিতে চায়ছে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। বর্তমানে রাজ্যের কৃষক, খেতমজুর বাঁচার জন্য পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছে। তাঁদের ভবিষ্যত অন্ধকার। আমাদের রাজ্যে খাদ্যের উৎপাদন কমছে। ভাল বীজ পাওয়া যাচ্ছে না, সারের দাম বৃদ্ধি, ভেজাল সার ফলে উৎপাদন কমেছে। আলুর দাম ক্রমশ কমছে, কৃষক দিশেহারা। খরচ যা হয়য়েছে সেই টাকা উঠছে না। সর্বনাশ হয়েছে কৃষকের। পাট চাষেও লাভ হচ্ছে না, সেখানে ভুট্টা চাষ হচ্ছে। ফসলের দাম নেই। কৃষকের ফসলের ন্যার্য্য দামের জন্য বারে বারে কৃষকসভা রাস্তায় আন্দোলন করেছে, অবরোধ, সমাবেশ, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু কৃষক নয় খেতমজুরের কাজ নেই, তারা বছরে ৩০দিন কাজ পাচ্ছেন না। ১০০ দিনের কাজও বন্ধ। দুই সরকার গ্রামবাংলাকে শ্মশানে পরিনত করতে চায়ছে। ওদের একটাই লক্ষ্য কর্পোরেট পুঁজির হাতে কৃষকের জমি তুলে দেওয়া। এর বিরুদ্ধে জানকবুল করে লড়বে পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভা।
Comments :0