School Jobs Scam

নিয়োগ দুর্নীতি, হাইকোর্টের নির্দেশে পাহাড়ে বাতিল ৩১৭ শিক্ষকের চাকরি

রাজ্য কলকাতা

গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) এলাকায় বেআইনিভাবে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বহু অভিযোগ উঠেছিল। এনিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। বুধবার এই মামলায় ৩১৭ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল করার নিৰ্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জির সময়েই (জিটিএ) এলাকায় স্কুলগুলিতে  ৯৩২ জন শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছিল। মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয় এই দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যের সর্বোচ্চস্তর থেকে। অর্থাৎ রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদনে জিটিএ এলাকায় স্কুলগুলিতে বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। 
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বেঞ্চ জানিয়েছে , ১৯৯৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল , কিন্তু তারপর থেকে অনিয়ম নিয়োগ-দুর্নীতি দেখা গিয়েছিল। তবে এই অভিযোগের বিরুদ্ধে জিটিএ বলেছে,  তৎকালীন সময়ে  রাজনৈতিক উত্থান-পতনের কারণে নিয়োগ করা হয়নি। কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে নিয়োগ নিয়মিত চলেছে। এই কারণে নিয়োগ না করার কারণ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। জিটিএ’র আইনজীবী এদিন আদালতে বলেন, জিটিএ রাজ্যকে প্রস্তাব দিয়েছিল শিক্ষক নিয়োগ নিয়মিত করার জন্য কিন্তু রাজ্য তখন সেটায় আপত্তি জানিয়েছিল। 
জিটিএ’র অধীনে থাকা প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিককে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা ছাড়াই প্রায় ১০০০ জনের কাছাকাছি শিক্ষককে পাহাড়ের বিভিন্ন স্কুলে নিয়োগ করা হয়েছে। এই বিষয়ে তদন্তের আরজি জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে বিচারপতি এবং আইনজীবীদের হাতে একটি বেনামী চিঠি এসেছে। জিটিএ এলাকায় স্কুল ও পৌরসভার নিয়োগে বিরাট অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে বেনামী চিঠিতে সেকথাও উল্লেখ করা হয়। চিঠির সত্যতা অনুসন্ধানে সিবিআই’কে তদন্তের নির্দেশও দেয় হাইকোর্ট। 
২০১৭ সালের আগে থেকেই এই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি শুরু হয়েছে। গোটা রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে পাহাড়ের এই নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যরা যুক্ত রয়েছেন। রাজ্য মন্ত্রিসভার ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এক বৈঠকে পাহাড়ের বিভিন্ন স্কুলে ২৯২ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সময় তাঁর যোগ্যতা যাচাই করে নিতে হবে। কিন্তু অভিযোগ কোনও যোগ্যতা নির্নায়ক পরীক্ষা ছাড়াই সর্বোচ্চ স্তরের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে ২০১৭ থেকে বেআইনি নিয়োগ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকে ১২১ জন, উচ্চ প্রাথমিকে ৫৯ জন। ২০১৭ সালে মাধ্যমিকে ৪৩৯ জন এবং ২০১৯ সালে ৩১৩ জন শিক্ষক মাধ্যমিকে নিয়োগ হয়েছে। এই সমস্ত নিয়োগ নিয়েই আদালতে মামলার রায়ে পাহাড়ে ৩১৭ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতির মন্তব্য, ওই নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনবিরোধী। শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের পাশাপাশি সিআইডি তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেও নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

Comments :0

Login to leave a comment