মুর্শিদাবাদের পর এবার বীরভূমের দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃতদের নাম ইউসুপ শেখ(২৫) এবং বাবু শেখ (২৬)। দু’জনেরই বাড়ি বীরভূমের নানুর ব্লকের পাটনীল গ্রামে। রাজ্যে কাজ না পেয়ে মাস খানেক আগে দুজনে চেন্নাই'র পুরপুন্ডায় পৌঁছে যান কাজের খোঁজে।
হত দরিদ্র পরিবারের ওই দুই যুবক চেয়েছিলেন টাকা রোজগার করে পরিবারের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেবেন।
শুক্রবার হঠাৎ গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে গুরুতরভাবে জখম হন দুজন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে দু’জনের মৃত্যু হয়।
নিহত ইউসুপ শেখ ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। তাদের মাটির বাড়তে বসবাস। রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, পাঁচ বছরের একটা শিশু। রয়েছেন বৃদ্ধ মা বাবা ও দুই বোবা বোন। একমাত্র রোজগেরে ছেলের দেহ কি ভাবে বাড়িতে আনবেন সেই দুশ্চিন্তা নিয়ে চরম বিপদে পড়েছে পরিবার।
একই পরিস্থিতি বাবু শেখের পরিবারের। থাকেন মাটির বাড়িতে। মেলেনি আবাস যোজনার পাকা ঘর। ভিন রাজ্যে কাজ করে পাকা বাড়ি করবেন সেই প্রত্যাশা ছিল। বাস্তবে তা আর হলো না। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পরলো দুজনে।
শুক্রবার বিকেলে নানুরের পাটনীল গ্রামের দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর যখন আসে তখন সিআইটিইউ বীরভূম জেলা সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশ্য সমাবেশ চলছিল আহমদপুর। সেখানেই খবর পান এলাকার বাসিন্দা জেলা পরিযায়ী শ্রমিক ইউনিয়ন ও সিআইটিইউ নেতা সুদেব থান্দার। তিনি শনিবার সন্ধ্যায় জানান, মৃত বাবু শেখের দাদু রবু শেখ সিআইটিইউ নানুর ব্লক সমন্বয় কমিটির সদস্য। বাবু শেখ ওই কারখানায় কাজ করছিলনা। সে অন্য স্থানে কাজ করে। সে এসছিল বন্ধু ইউসুপের সঙ্গে দেখা করতে। সেই সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পরে তাদের নিয়ে যাওয়া চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে অনেক টাকা খরচ করে কি ভাবে মৃতদেহ আনবেন পরিবার এই নিয়ে তার দাদু'র ঘুম উড়ে গেছে। তিনি জানান, রবিবার পাটনীল গ্রামে সংগঠনের এক প্রতিনিধিদল সেখানে যাবেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত দুই পরিবারের বাড়িতে গিয়ে মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে আসার সমস্ত সহযোগীতার আশ্বাস দেন।
Migrant Workers Death
চেন্নাইয়ে সিলিন্ডার ফেটে বীরভূমের দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু
×
Comments :0