‘‘গার্ডেনরিচে বহুতল ভাঙার জন্য দায়ী রাজ্যের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন।’’
মঙ্গলবার মুজফ্ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন একথা বললেন কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র এবং সিপিআই(এম) সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী সায়রা শাহ হালিমও।
বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পৌরসভায় দুর্নীতি বেড়েছে। টাকার বিনিময় একের পর এক বেআইনি প্ল্যান পাশ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় কাউন্সিলররাও এর সঙ্গে যুক্ত।’’
উল্লেখ্য, গার্ডেনরিচে যে এলাকায় বাড়িটি ভেঙে পড়েছে, সেই এলাকার বিধায়ক কলকাতা পৌরসভার মেয়র ববি হাকিম।
তিনি আরও বলেন, ‘‘হাইকোর্টে প্রতিদিন কলকাতা এবং হাওড়া অঞ্চলের বহু সাধারণ মানুষ আসছেন বেআইনি নির্মান বন্ধ করার জন্য মামলা করতে। এটা আমার কথা নয়। হাইকোর্টের তথ্য দেখলেই দেখা যাবে।’’
উল্লেখ্য, সোমবার ফিরহাদ হাকিম দাবি করেন যে বামফ্রন্ট সরকার এই বেআইনি নির্মাণের জন্য দায়ী। সেই প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান মেয়রকে কড়া আক্রমণ করেন বিকাশ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘বাম আমলে বেআইনি নির্মানের অনুমোদন দেওয়া হতো না। গার্ডেনরিচে যে বাড়ি ভেঙে পড়েছে তা দু’বছর আগে তৈরি শুরু হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘সরকারের পক্ষ থেকে যে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছে, তা দিতে হবে অভিযুক্ত প্রোমোটারের কাছ থেকে আদায় করে।’’
সায়রা হালিম বলেন, ‘‘এলাকার সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলর সব তৃণমূলের। একই পরিবারের তিনজন সদস্য মারা গিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত মোট ন’জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর দায় এই সরকারকে নিতে হবে। তাদের জবাব দিতে হবে কেন বেআইনি ভাবে ওই বাড়ি তৈরি হচ্ছিল? কে বা কারা এই অনুমতি দিয়েছিল?’’ এদিন পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সরব হয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার সিপিআই(এম) প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার পুলিশ আমাদের কোনও ভাবে ঢুকতে দিচ্ছিল না ঘটনাস্থলে। তাদের ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’
এই ঘটনার দায় নিজেদের ঘার থেকে নামাতে পৌরসভার আধিকারিকদের দিকে আঙুল তুলছেন বর্তমান মেয়র। ইতিমধ্যে কয়েকজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে এই সব ‘আই ওয়াশ’। ভোট মিটে গেলে আবার বেআইনি নির্মান শুরু হয়ে যাবে।’’
এদিন সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয় যে মেয়র অভিযোগ তুলেছেন বাম আমলে পৌরসভার অডিট হতো না। প্রাক্তন মেয়র উত্তরে বলেন, ‘‘তৃণমূলের ডিএনএ-তে মিথ্যা কথা বলার অভ্যাস আছে। বামফ্রন্ট পরিচালিত বোর্ডের মেয়াদে প্রতি বছর অডিট হয়েছে। বকেয়া অডিট করা হয়েছে। পৌরসভার কোষাগারে ৫০০ কোটি টাকা জমা ছিল যখন আমরা দায়িত্ব ছেড়েছি।’’
উল্লেখ্য, তৃণমূল বোর্ডের মেয়াদে ঘাটতিতে চলে গিয়েছে কলকাতা পৌরসভার তহবিল।
Comments :0