বিশ্বনাথ সিন্হা: রায়গঞ্জ
অপুষ্টি রয়েছে সারা দেশে। অপুষ্টিতে ভুগছেন মহিলারা। খাদ্য বা রোজগারের দাবিই জনতার দাবি। তা আড়াল করতে ভাগাভাগির রাজনীতি চলছে। নয়া ফ্যাসিবাদী ঝোঁক স্পষ্ট এই রাজনীতিতে। রাজ্যের তৃণমূল সরকারও একই কৌশল নিয়েছে। ভাগাভাগির রাজনীতি রুখে জনতার জীবনজীবিকার পক্ষে মেহনতির জোট গড়ছে লাল ঝান্ডা।
সোমবার উত্তর দিনাজপুরের মহারাজা এলাকায় জনসমাবেশে একথা বলেছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মেহনতির জোটকে শক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। সিপিআই(এম) রায়গঞ্জ উত্তর ও হেমতাবাদ এরিয়া কমিটির ডাকে মহারাজা এলাকায় সমাবেশ হয় এদিন। ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য জমিল ফৌরদৌস সহ নেতৃবৃন্দ। আশেপাশের বহু এলাকা থেকে এদিন যোগ দেয় জনতা। ছিলেন মহিলারা বড় সংখ্যায়।
এদিন সমাবেশ হয় সিপিআই(এম) রায়গঞ্জ উত্তর এরিয়া কমিটির দপ্তরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে। সেলিম বলেছেন, মেহনতির ঐক্য মজবুত করতো হবে। এটিই বামপন্থীদের মূল শক্তি।
সমাবেশে দাবি ছিল, মহারাজাতে থানা ও আলাদা প্রশাসনিক ব্লক করতে হবে। হেমতাবাদ কলেজ স্থাপন করতে হবে, মহারাজা ও ভাটোল স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ২০০ শয্যার হাসপাতালে রূপান্তরিত করতে হবে। হেমতাবাদ হাসপাতালে সিজার ব্যবস্থা সহ উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা চালু করতে হবে। দাবি ছিল বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন রাজ্যে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
সেলিম বলেন, দেশের সব মানুষ পুষ্টিকর খাদ্য পাচ্ছে না। শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। সেখানে রাজনীতির কাজ হওয়া উচিত শিশুদের খাবারের ব্যবস্থা করা। মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করা। তার বদলে ভাগাভাগির রাজনীতি হচ্ছে। একে রুখতে হবে।
সেলিম বলেন, লাল ঝান্ডা কোনও ব্যক্তির পার্টি নয়, কালীঘাট বা নাগপুর থেকে চলে না। কমিউনিস্ট পার্টি সাধারণ মানুষ গরিব, খেটে খাওয়া, মেহনতি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলে। আর এই পার্টি অফিস সম্পূর্ণ হলে এখান থেকে লড়াই আন্দোলন পরিচালিত হবে। সমাজের সব অংশের মানুষ আসবেন তাঁদের মতামত দেবেন। হিন্দু মুসলিম, শ্রমজীবী, খেত মজুর, শিক্ষক, অধ্যাপক, ছাত্র যুব, কৃষক সবাই আসবেন। এই ঐক্যই বামপন্থীদের মূল শক্তি।
দেশ ও রাজ্যের শাসক দল এই ঐক্যকে ভাঙছে। প্রথমে মন্দির মসজিদ দিয়ে শুরু হল, বর্তমানে কে কোন ভাষায় কথা বলে তা নিয়েও ভাগাভাগি করছে। এই ভাগাভাগির কোন শেষ নেই। সব জাতি ধর্মের মানুষ এক হয়ে স্বাধীনতার সময় ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ‘নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান/ বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান।’ অথচ এ দেশেই মানুষের পোশাক নিয়েও চলছে ভাগাভাগি। কেউ শাড়ি পড়বে, কেউ সালোয়ার কামিজ পড়বে, কেউ প্লাজো পড়বে, কেউ আবার বোরখা পড়বে- এটাই ভারতের সংস্কৃতি। ছেলেরা লুঙ্গি পড়বে কেউ প্যান্ট পড়বে কেউ পায়জামা পড়বে। এই ভাবেই আমাদের মূল্যবোধ তৈরি হয়েছে। আর স্বাধীন দেশে এটা মানুষের অধিকার কে কী খাবে, কে কী পড়বে, কে কোন ভাষায় কথা বলবে- তাতে কারোর হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই।
মন্তব্যসমূহ :0