উৎপল মজুমদার
শুখা মরশুমে কাজ না করে বর্ষার শুরুর সময় কাজ করা হচ্ছে। বালির বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে খরচ বস্তা পিছু ১৩ থেকে ১৪ টাকা সেখানে দাম কয়েকগুণ বেশি দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা লুট করা হচ্ছে। ভাঙন রোধের নামে লুটের শিকার হচ্ছে জনতা।
সোমবার মালদহের সেচ দপ্তর অভিযানে সরবে এই বাস্তবতা হাজির করেছে বামফ্রন্ট। মালদহ জেলার উত্তর, পশ্চিম, ও দক্ষিণ এলাকা দিয়ে গঙ্গা সহ মহানন্দা, ফুলহর, কোশি প্রভৃতি নদী বয়ে গেছে। নদীর জল বাড়তে শুরু করলেই বন্যার জলে যেমন কৃষি জমি প্লাবিত ফসলের ক্ষতি হয়। এক দশকের বেশি সময় ধরে ভাঙ্গন ও বন্যা রোধে কোন উদ্যোগ নেই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের। নেই কোন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। যে ৫ দফা দাবিকে সামনে রেখে এই কর্মসূচি পালিত হয় তারমধ্যে রয়েছে রতুয়া-১, মানিকচক, কালিয়াচক-৩, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ও ইংরেজবাজার সহ জেলার বিভিন্ন ব্লক এলাকা।
সেচ দপ্তর অধীনে থাকা পতিত জমিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করার দাবি, গঙ্গা ভাঙ্গন সমস্যাকে জাতীয় বিপর্যয় হিসাবে ঘোষণা করে নদী ভাঙ্গন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে দায়িত্ব গ্রহণ করা, ২০২৪ সালে নদী ভাঙ্গন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সরকারী ত্রাণ ও পুনর্বাসন খাতে সরকারী অর্থ বরাদ্দ ও খরচের হিসাব জনগণের সামনে শ্বেতপত্র হিসাবে প্রকাশের দাবিতে এই কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে মালদহ টাউন হলের সামনে থেকে সেচ দপ্তর অভিযানের কর্মসূচি শুরু হয় এবং তা বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে সেচ দপ্তরের সামনে পৌঁছায়। কিন্তু আধিকারিকরা দাবিপত্র নিতে টালবাহানা করছিলেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এক শ্রেণির আধিকারিক, ঠিকাদার ও তৃণমূল এই দুর্নীতি চক্রে যুক্ত। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নীরবতা দেখে মনে হয় এরাও এর সাথে যুক্ত। শুধু এখানেই শেষ নয়, বন্যা ও ভাঙ্গন দুর্গতদের ত্রিপল সহ যে ত্রাণ সমগ্র দেওয়া হচ্ছে তাও প্রকৃত দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। সব মিলিয়ে সব ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি চলছে। এর বিরুদ্ধে আমরা আরো বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।
সভায় সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য জমিল ফিরদৌস, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অজিত সাহা, সিপিআই(এম) নেতা তথা সিআইটিইউ-র জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি সিনহা, সিপিআই এর জেলা সম্পাদক বাবর সরকার প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন সিপিআই(এম) নেতা অম্বর মিত্র।
সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য জামির মোল্লা বলেন মালদহের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ জেলার নদী ভাঙ্গনে একই ভাবে বিপর্যস্ত। মানুষ বাড়ীঘর, চাষের জমি সব হারাচ্ছে। অথচ এদের ল্যান্ড লুজার হিসাবে কোন স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। কোন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। ভাঙ্গন ও বন্যা রোধের কোন উদ্যোগ নেই দুই সরকারের। তাই আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর দুই জেলার বামফ্রন্ট নেতৃত্ব ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য শতরূপ ঘোষ বলেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের শাসক দল মানুষের সমস্যা নিয়ে এখন কোন ব্যবস্থা নেয় না। তারা ব্যস্ত জাত-ধর্ম-ভাষা নিয়ে। আর এরা নিয়ে মালদহ ও মুর্শিদাবাদ এলেও এদের নেতাদের নদী ভাঙন ও বন্যার্তদের মানুষদের পাশে দেখা যায় না। ফারাক্কা কর্তৃপক্ষকে ডেপুটেশনে কাজ না হলে নভেম্বরে দিল্লি অভিযান হবে।
বক্তব্য রাখেন রাজ্যের প্রাক্তন সেচ মন্ত্রী তথা আরএসপি নেতা সুভাষ নস্কর।
land erosion
ভাঙন রোধের নামে দুর্নীতি, বামফ্রন্টের সেচ দপ্তর অভিযান মালদহে

×
Comments :0