যোশীমঠের পরিণতি হতে পারে পশ্চিমবঙ্গে কয়লা বলয় রানিগঞ্জের! এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বিভিন্ন কারণে, বিশেষজ্ঞরা আগামী দিনে রানিগঞ্জকে যোশীমঠের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না যদি না এই অঞ্চলটিকে বিপদের মউখে ঠেলে দেওয়া বেআইনি কর্মকান্ডগুলি রোধে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়। সিভিল ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ্ত মিত্রের মতে, কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের (Coal India Limited) মতো সরকারী কয়ালা খননকারী কর্তৃপক্ষের একটি খনি থেকে কয়লা তোলার পরে পরিত্যক্ত খনিগুলিকে বালি, মাটি এবং জল দিয়ে ভরাট করতে হবে।
‘‘কিন্তু প্রায়শই, এই ভরাট করার প্রক্রিয়াতে গুরুতর অবহেলা দেখা যায়, যা পরিত্যক্ত খনির মাটি ফোঁপড়া করে দেয়। এবং এই মাটির ওপরেই নতুন নির্মাণের পরে, সেখানকার মাটি প্রায়শই সেই ওজন এবং চাপ সহ্য করতে পারে না। ফলস্বরূপ এই এলাকায় ঘন ঘন ধস ঘটে,’’ মিত্র উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি মনে করেন যে রানিগঞ্জের প্রকৃতির সাথে যোশীমঠের পার্থক্য থাকবে।
‘‘যোশীমঠের ক্ষেত্রে পুরো এলাকাটিই ধস প্রবণ। তবে, রাণীগঞ্জের ক্ষেত্রে, সেই অঞ্চলগুলিতেই ধসের ঝুঁকি রয়েছে যেখানে এই ধরনের পরিত্যক্ত খনিগুলির উপর নির্মাণ রয়েছে যা সঠিকভাবে ভরাট করা হয়নি।  তবে এখানেও জীবনের ক্ষতির আশংকা রয়েছে,’’ মিত্র ব্যাখ্যা করেছেন।
লেখক এবং কয়লা বিশেষজ্ঞ, সুনীল মুখোপাধ্যায়ের মতে, যেহেতু রানিগঞ্জ এলাকায় কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের পরিত্যক্ত খনিগুলি পর্যাপ্ত পরিমাণে বালি-মাটি-জল দিয়ে ভরাট করা হয়না, তাই এই ধরনের পরিত্যক্ত খনিগুলি চোরাকারবারীদের জন্য সহজ লক্ষ্য হয়ে ওঠে।আসানসোল থেকে দুই বারের প্রাক্তন সিপিআই(এম) লোকসভা সদস্য বংশ গোপাল চৌধুরীর মতে, ২০০৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় ছিল যেখানে বলা হয়েছিল যে কয়লা খননকারী সংস্থাকেও পরিত্যক্ত খনিগুলি পূরণ করার দায়িত্ব নিতে হবে।
‘‘এডিডিএ-কে (Asansol-Durgapur Development Authority) রাণীগঞ্জ মাস্টারপ্ল্যানের রূপায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল যার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ২,৬০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছিল। স্থানীয় সাংসদ হিসাবে, আমি যখন এডিডিএ-এর চেয়ারম্যান ছিলাম, তখন রানিগঞ্জ, জামুরিয়া এলাকায় ঝুঁকি প্রবণ জমি চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছিল। তবে , পরে সেই প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় এবং সংকট আরও গভীর হয়,‘‘ চৌধুরী বলেছেন।
                        
                        
একই সময়ে, এডিডিএ-র এক আধিকারিক বলেছেন যে আরও একটি সমস্যা রয়েছে যা এই অঞ্চলে পুনর্বাসনের অগ্রগতিকে বাধা দিচ্ছে।
‘‘এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের অনেকেই তাদের স্থানগুলি ছেড়ে বিকল্প জায়গায় যেতে অনিচ্ছুক। তারা চান যে সরকারি কর্তৃপক্ষ তাদের স্থানান্তরিত না করে জমির অবনমনকে আটকানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণে এটি প্রায়শই সম্ভব হয় না,’’ এক কর্মকর্তা বলেছেন।
                                        
                                    
                                
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
Comments :0