Supreme Court

অনির্দিষ্টকাল বিল আটকে রাখা যায় না, তবে সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া যায় না : সুপ্রিম কোর্ট

জাতীয়

কোনও বিলে রাজ্যপাল সম্মতি না-দিলে সেই বিল বিধানসভায় ফেরত পাঠাতে হবে আটকে রাখা যাবে না। বিল আটকে রাখতে পারবেন না রাজ্যপাল। ‘প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্স’ মামলায় বৃহস্পতিবার এমনই কথা বললো সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতির এই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি এএস চন্দরকর।
সুপ্রিম কোর্টের কথায়, কোনও বিল রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর রাজ্যপালের কাছে গেলে, রাজ্যপালের সামনে তিনটি কাজ থাকে। বিলটিতে সই করা, না হলে সেটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো, অথবা সম্মতি না-দিয়ে বিলটি বিধানসভায় ফেরত পাঠানো।

সুপ্রিম কোর্টের কথায় এই তিনটি বিকল্পের মধ্য থেকে কোন একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন রাজ্যপাল। তবে কতদিনের মধ্যে রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত নেবেন তা নির্ধারন করে দেওয়ার ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানবিচারপতি বেঞ্চ। এছাড়া রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির কাজে শীর্ষ আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।  তবে দীর্ঘ দিন ধরে কোন বিষয় ঝুলে থাকলে সেই ক্ষেত্রে সাংবিধানিক আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে জানিয়েছে বেঞ্চ।
উল্লেখ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে সম্মতি দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতির জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেই এই বিষয়ে রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যাখ্যা করতে শীর্ষ আাদালতের সামনে ১৪টি প্রশ্ন পাঠিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। তারপর থেকেই প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্সের মামলা চলছিল সুপ্রিম কোর্টে।

সংবিধান অনুযায়ী বিধানসভায় বিল পাশ হওয়ার পর তা রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয় তার অনুমোদনের জন্য। রাজ্যপাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তা সংবিধানের ২০০ ধারা অনুসরণ করে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেন। সংবিধানের ২০১ ধারা অনুযায়ী, কোনও বিল রাষ্ট্রপতির কাছে গেলে তার সামনে দু’টি বিকল্প থাকে হয় ওই বিলে সম্মতি জানানো, অথবা তা নাকচ করে দেওয়া। কিন্তু এই কাজের জন্য সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে কোনও সময়সীমা দেওয়া হয়নি।

গত ১২ এপ্রিল তামিলনাড়ু সরকারের করা এক মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতিকে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আদালতের আছে কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। এ বিষয়ে শীর্ষ আদালতের পরামর্শ চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। কেন্দ্রীয় সরকার জানায় তারা রাজ্যপালকে সময় বেঁধে দেওয়ার বিরোধী। এদিন সুপ্রিম কোর্ট যেই রায় দিয়েছে তা সরকারের পক্ষেই গিয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment