CESC Power fault

অসহ্য গরমে টানা লোডশেডিং, ক্ষোভ কলকাতা শহরতলিতে

কলকাতা

দীপাঞ্জনা দাশগুপ্ত দে

কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। এরই মধ্যে গরম বাড়তেই বিদ্যুৎ বিপর্যয় শুরু হয়েছে শহর কলকাতা জুড়ে। বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তেই সোমবারের পর মঙ্গলবার দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। কোথাও ১ ঘন্টা কোথাও ৩ ঘন্টা আবার কোথাও সারা রাত থাকছে না বিদ্যুৎ। সারা দিনের খাটুনির পর রাতে স্বস্তির ঘুম থেকে বঞ্চিত থাকছে শহরবাসী। রাতে যেমন বিদ্যুৎ চলে গিয়ে কোথাও আবার ভোরের দিকে এলেও সকাল হতেই ফের চলে যায় বিদ্যুৎ। তীব্র গরমে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়া নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

সোমবার রাতেও বিদ্যুৎ ছিল না কলকাতার বিভিন্ন এলাকায়। মঙ্গলবার রাতেও একই ঘটনার পুনারাবৃত্তি হয়। হালতু ৯৯ ওয়ার্ডে বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা বর্মন জানান যে পরপর দুই রাতেই ঠিক ১১.৩০ পরেই বিদ্যুৎ চলে যায়। সিইএসসি’র দেওয়া হেল্পলাইন নম্বরের ফোন করলেও কেউ তা তোলেনা। পরে টুইটারের মাধ্যমে অভিযোগ জানান সম্ভব হয়। টুইটারে সিইএসসির তরফে পাল্টা রিপ্লাই দিয়ে জানান হয় যে লাইনে কাজ হচ্ছে। শিঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু বাস্তবে সেই সমস্যা সমাধান হতে প্রায় ২ ঘন্টা সময় লেগে যায়’।

শুধু দক্ষিণ কলকাতাতেই নয় উত্তর কলকাতারও বিস্তীর্ণ এলাকাতেও বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়। মঙ্গলবার প্রায় সারা রাত বিদ্যুৎ ছিল দক্ষিণ দমদম পৌরসভার ১ থেকে ৬ ওয়ার্ড পর্যন্ত। দক্ষিণ দমদমের ১ ওয়ার্ডের বাসিন্দা অভিজিৎ দাস পেশায় একজন বিমান কর্মী। তিনি জানান ‘সারাদিন কাজের পর বাড়িতে ফিরে খেয়ে শুতে যাব তখনই বিদ্যুৎ চলে যায়। সোমার রাতেও একই ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু ভেবেছিলাম চলে আসবে। পরে সিইএসসি’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায় ট্রান্সফর্মারে সমস্যা হওয়ায় বিদ্যুৎ আসতে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা সময় লাগবে। তারপর বিদ্যুৎ আসে ভোর পৌনে ৪টে নাগাদ।’ 

{ad]

সিইএসসি দমদম এলাকায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের বিষয়টি মেনে নিয়ে এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণ অতিরিক্ত এসি’র ব্যবহার। এই এলকাগুলোতে ফ্ল্যাট বাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এসি‘র ব্যবহারও বেড়েছে। বহু বাড়িতে সিইএসসি থেকে অনুমতি না নিয়েই এসি’র ব্যবহার করছে। ফলে অতিরিক্ত এই লোড টানতে না পেরে বসে গিয়েছে বেশ কয়েকটি ট্রান্সফর্মার। কোথায় সমস্যা হচ্ছে তা জানতে বুধবার সকালে দক্ষিণ দমদম পৌরসভার ১ থেকে ৬ ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়িতে মিটার পরীক্ষা করতে আসে সিইএসসি’র কর্মীরা। বিশেষ যন্ত্র দিয়ে তারের ক্ষমতা পরীক্ষা করে তারা।   

যদিও সিইএসসি’র এই কথায় মন ভরছে না সাধারণ মানুষের। তাদের দাবি সিইএসসি’র ইউনিট প্রতি অনেক বেশী টাকা নেয়। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ পর্ষদ যেখানে তিন মাসে বিল পাঠায় সেখানে প্রতিমাসে বিল পাঠিয়ে তাদের তুলনায় কয়েকগুন বেশী আয় করে সিইএসসি। সেক্ষেত্রে তাদের পরিকাঠামো এতটাই দুর্বল যে গরম পড়লে বিদ্যুতের চাহিদা বারতেই বিদ্যুৎ সরাবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। টাকা বেশী দিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরাবরাহই আশা করা হবে বলছেন সাধারণ মানুষ। 

Comments :0

Login to leave a comment