MURSHIDABAD SALIM MAMATA

প্রার্থী সেলিম, পাশের কেন্দ্রে প্রচারে এসেও শঙ্কায় মমতা

রাজ্য লোকসভা ২০২৪

অনির্বাণ দে: বহরমপুর  

সোমবার বিকেলে হেলিকপ্টারে ভগবানগোলায় উড়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ভাষণ শেষ। মঞ্চে শুরু হলো গান। কী গান? ‘মন আমার কেমন কেমন করে রে’। কোমরে আঁচল জড়িয়ে গানের তালে নাচলেন মুখ্যমন্ত্রীও।
গান বলে নয়, মমতার মন যে ‘কেমন কেমন’ বোঝা গিয়েছে তৃণমূলের জোড়া সভা থেকেও। ধরা পড়েছে শঙ্কা। তার কারণ মুর্শিদাবাদে প্রার্থী মহম্মদ সেলিম। 
এদিন সকালে ডোমকলের মোমিনপুর মোড় থেকে শুরু হয় মহম্মদ সেলিমের নির্বাচনী প্রচার।  
কামুড়দিয়াড় , ঘোড়ামাড়া, নিশ্চিন্তপুর, বক্সিপুর, হাড়ুরপাড়া ঘুরে সেলিম যখন কুচিয়ামোড়া পৌঁছেছেন। তখনও অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন মানুষ। জানিয়েছেন, গ্রাম বাঁচাতে হারাতে হবে বিজেপি, তৃণমূলকে। এদিন  কাটাকোপরা, খিদিরপারা, কুপিলায় যান মহম্মদ সেলিম।                                             
এর আগে, সোমবার, খড়গ্রামের সভায় বলেছেন মমতা। খড়গ্রামে নগর কিষাণ বাজারে বাঁধা হয়েছিল প্যান্ডেল। মঞ্চে  ছিল এয়ার কুলার। মাথার উপর ছাউনি। দুপুরে নগরে নামে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার। হেলিকপ্টারে আসতে কত কষ্ট হচ্ছে সেই দুঃখ গ্রাম থেকে সমাবেশে আসা মানুষকে শুনিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। 
জঙ্গিপুরে তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমানের হয়ে প্রচারে এসেছিলেন মমতা। কিন্তু তার মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী নাম ধরে ডাকলেন দু’জনকে। একজন দলের প্রার্থী, দলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি। অন্যজন জেলা চেয়ারম্যান। দু’জনেই বিড়ি শিল্পের মালিক।
কী বললেন মমতা ?
মমতা বলেছেন, ‘‘সবাইকে বলব আরেকটু  অ্যাক্টিভ হোন ।   পাশের কেন্দ্র মুর্শিদাবাদ। ওখানে উড়ে এসে একজন বাজপাখি দাঁড়িয়েছে। তৃণমূলের ভোট কাটতে। আমি জাকির, খলিলুর সবাইকে বলে যাচ্ছি। নজর দিতে হবে। এরা সকাল সন্ধ্যা আমাদের গালাগালি দেবে। আমাদের ভোট কেটে এরা সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভোট ভাগ করে বিজেপি’কে জেতাবে। এই ভুলটা যেন না আমরা  করি।’’
মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট। মন কেমন কেমন করছে। মুর্শিদাবাদে লড়াইয়ে পায়ের তলায় মাটি আলগা বুঝেই বাড়তি নজর দিতে বলছেন বিড়ি শিল্পের দুই মালিককে।
মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে কোনও সমীকরণেই জেতার অবস্থায় নেই বিজেপি। মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদ বিধানসভায় বিজেপি জিতলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোথাও দেখা যায়নি বিজেপি-কে।  ডোমকল, জলঙ্গী, রানিনগর থেকে মুর্শিদাবাদ জিয়াগঞ্জ ব্লকে যেখানে মাটি কামড়ে লড়েছেন কংগ্রেস, সিপিআই(এম) কর্মীরা। সেখানে পঞ্চায়েতে লড়াইয়ের জায়গাতেই ছিল না বিজেপি। এদিন মমতা যদিও এলাকার মানুষকে ভয় দেখাতে চেয়েছেন যে বিজেপি জিতে যাবে। তাই ভোট চেয়েছেন আবু তাহের খানের হয়ে।
নিজের হেলিকাপ্টারের ভাড়া নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন মমতা। তবে চুপ ছিলেন নির্বাচনী বন্ড নিয়ে। যেমন এদিনের দুই সভাতেই চুপ ছিলেন মুর্শিদাবাদের ১৩ লক্ষ বিড়ি শ্রমিকের মজুরি নিয়ে।
অবশ্য মিথ্যা বলতে এদিনও কসুর করেননি মমতা। দাবি করেছেন, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মুর্শিদাবাদ ক্যাম্পাস তিনি তৈরি করেছেন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে স্পষ্ট লেখা যে ২০১০ সালে ওই ক্যাম্পাসের প্রতিষ্ঠা হয়।

Comments :0

Login to leave a comment