Md Salim Gardenreach

আমাদের আটকাচ্ছেন, আর চোরদের পাহারা দিচ্ছিলেন’

কলকাতা

সোমবার গার্ডেনরিচে মহম্মদ সেলিম। রয়েছেন কল্লোল মজুমদার এবং পার্টি নেতৃবৃন্দ।

গার্ডেনরিচের দুর্ঘটনাস্থলের পাশে যেতে পুলিশ বাধা দিলেও জোর করে সোমবার দুপুরে সেখানে যান সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও পার্টির নেতৃবৃন্দ। পুলিশ অফিসারদের বাধা উপেক্ষা করে সেলিম তাঁদের বলেন, ‘এতদিন ধরে যখন বেআইনি নির্মাণ চলছিল তখন কোথায় ছিলেন? চোরদের পাহারা দিচ্ছিলেন?’ 
মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর পেয়েই এদিন গার্ডেনরিচে যান মহম্মদ সেলিম, সিপিআই(এম)’র কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার, দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম, পার্টি নেতা ফৈয়াজ আহমেদ, সুদীপ সেনগুপ্ত, কৌস্তভ চ্যাটার্জি।  এদিন হাসপাতালে গিয়েও আহতদের সঙ্গে এবং নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন, কথা বলেন তাঁরা। দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যরা কাঁদতে কাঁদতে তাঁদের কাছে অভিযোগ করেছেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের সবাই তো সব জানতো, কেন ব্যবস্থা নেয়নি আগে! এখন আমাদের কী হবে?’
এই ক্ষোভ নিয়েই এদিন গার্ডেনরিচে দুর্ঘটনায় আটকে থাকাদের অবস্থা দেখতে যান সেলিম এবং পার্টি নেতৃবৃন্দ। কিন্তু পুলিশের অফিসাররা তাঁকে বাধা দেন। সেলিম সঙ্গে সঙ্গে পালটা বলেন, ‘আপনি কেন আটকাচ্ছেন? কার নির্দেশে? আমি এখানে এসেছি আহতদের দেখতে, এখানকার মানুষের বিপদে, তাঁদের উদ্ধার করা হচ্ছে কিনা জানতে।’ 
কিন্তু পুলিশ অফিসাররা সেলিমকে বলতে থাকেন, ঊর্ধ্বতনের নির্দেশে কাউকে যেতে দেওয়া হবে না। উত্তেজিত সেলিম তাঁকে বলেন, ‘আপনি কি দারোয়ান নাকি পুলিশ অফিসার? পুলিশ অফিসার হলে বলুন কেন আটকাচ্ছেন? লজ্জা করে না চোরদের পাহারা দিচ্ছেন! বেআইনি নির্মাণ যখন হচ্ছিল তখন কোথায় ছিলেন?’ 
পরে মহম্মদ সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদত ছাড়া দুর্বৃত্তশাসন কায়েম করা যায় না, এখানেও সেভাবেই হয়েছে। গার্ডেনরিচ এলাকা জুড়ে তৃণমূল, দুষ্কৃতী এবং পুলিশ মিলে যে দুর্নীতি ও দুষ্কৃতীরাজ তৈরি করেছে তার ফলেই বেআইনি নির্মাণ এবং তার জন্যই এত মানুষের মৃত্যু। পুলিশ এবং প্রশাসনের মদতে বেআইনি নির্মাণে জড়িত সিন্ডিকেট ও প্রোমোটাররাজ থেকে বিপুল অঙ্কের তোলার টাকা যায় তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের কাছে। সেইজন্যই পুলিশ কর্পোরেশন চোখ বুজে থেকেছে বেআইনি নির্মাণ এবং আরও অনেক অপরাধজনক ঘটনা ঘটতে থাকলেও।’ 
সেলিম প্রশ্ন তোলেন, ‘এমন ঘিঞ্জি এলাকায় পরিসর না থাকা সত্ত্বেও বহুতল নির্মাণের কাজ হচ্ছিল? এখানকার বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম তো কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র, মন্ত্রী! একদিনে তো বহুতল নির্মাণ হয়নি, তিনি জানতেন না বেআইনি কাজ চলছে? আসলে নেতা মন্ত্রীদের তুষ্ট করেই এইসব কাজ হচ্ছে বলেই তাঁরা চুপ করেছিলেন, পুলিশ প্রশাসনকেও চুপ করিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু ৮ জনের প্রাণহানি হয়ে গেছে, এই গরিব পরিবারগুলোর কী হবে? কেবল হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা ধরিয়ে দিলে তাঁদের যন্ত্রণা দূর হয়ে যাবে?’ 
মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে এখন ফিরহাদ হাকিম বামফ্রন্ট সরকারের সময়কালের দিকে আঙুল তুলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এই সম্পর্কে সেলিম বলেছেন, ‘ওরা তো কিছু হলেই চৌত্রিশ বছর দেখায়। এত মানুষের প্রাণহানির পরেও এমন নিকৃষ্ট মন্তব্য করে কী করে? সর্বত্র যে চুরি দুর্নীতি তোলবাজি চলছে সে সব বাম জমানায় ছিল?’

Comments :0

Login to leave a comment