Dhupguri

বন্যা কবলিত মানুষদের নিয়ে ভাইফোঁটা ধূপগুড়িতে

রাজ্য জেলা

ভাইফোঁটা বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ভাই-বোনের চিরন্তন স্নেহ, ভালোবাসা ও পারস্পরিক বিশ্বাসের এক প্রতীক। আজকের সমাজে ভাইফোঁটার তাৎপর্য শুধুমাত্র পারিবারিক ভালোবাসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এটি মানবিকতা, সম্প্রীতি ও ঐক্যের উৎসব হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছে। সেই মানবিক ভাবনাকেই সামনে রেখে এক অন্যরকম উদ্যোগ দেখা গেল ধূপগুড়িতে। 
সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত ধূপগুড়ি ব্লকের গধেয়ারকুঠি পঞ্চায়েতে এলাকায় বহু মানুষ এখনও গৃহহীন। বন্যার ক্ষত এখনও শুকোয়নি, কিন্তু মানুষের মনোবল অটুট। এই কঠিন সময়ে মানবিকতার নজির সৃষ্টি করল ‘আমাদের রান্নাঘর’। হোগলারটারি এলাকার গৃহহীন মানুষের সঙ্গেই তারা উদযাপন করল ভাইফোঁটা।
এই বিশেষ দিনে, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে একে অপরের কপালে ফোঁটা এঁকে উৎসবের আবহ তৈরি করে। দীপাঞ্জনা, প্রতিমা, রমলা, রাধিকারা ফোঁটা দিলেন লতিফুল, করিমুল, সঞ্জিত, পার্থদের কপালে আর তারপর মিষ্টি মুখ ও হাসির উচ্ছ্বাসে ভরে উঠল চারপাশ। এই উৎসব প্রমাণ করল, রক্তের সম্পর্ক ছাড়াও মানবিকতার বন্ধন কতটা দৃঢ় হতে পারে।
ভাইফোঁটার এই উৎসবে ‘আমাদের রান্নাঘর’-এর পক্ষ থেকে এদিনও প্রায় ৫০০ জনের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। সাময়িক বিপর্যয়ের মধ্যে এই আনন্দ মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক পীযুষ মিশ্র, অজবালা রায়, সন্তোষ রায়, মোক্তার হোসেন, পুলক সরকার, পরিতোষ রায়, নিরঞ্জন রায় সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
জেলা সম্পাদক পীযুষ মিশ্র বলেন, ‘ভাইফোঁটা শুধু রক্তের সম্পর্কের উৎসব নয়, এটি এখন মানবিক সম্পর্কের প্রতীক। বিপর্যয়ের সময় মানুষ যদি মানুষের পাশে দাঁড়ায়, সেটাই প্রকৃত সম্প্রীতির প্রতিচ্ছবি। ভাইফোঁটার এই উৎসব সেই বার্তাই বহন করে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আজ আমরা একসাথে যে ফোঁটা দিলাম, তা আসলে মানবিকতার ফোঁটা।’
বন্যা-বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত জীবনের মাঝেও ‘আমাদের রান্নাঘর’-এর এই অনন্য ভাইফোঁটা উদযাপন হোগলারটারির মানুষের মধ্যে নতুন আশার আলো সঞ্চার করেছে। মানবিকতার উষ্ণতায় ভরে উঠেছে মানুষের মন। ভাইফোঁটা আজ শুধু কপালের ফোঁটা নয় এটি ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও দায়িত্ববোধের বন্ধন।

Comments :0

Login to leave a comment