Bangla Bachao Yatra

ধূপগুড়ির পাইকারি বাজার বাঁচানোর দাবি জোরালো হচ্ছে, বাংলা বাঁচাও যাত্রা’য়

জেলা বাংলা বাঁচাও যাত্রা

কৌশিক দাম

কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে শুরু হওয়া সিপিআইএমের ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’য় এবার উত্তরবঙ্গের এক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদ বাঁচানোর দাবি জোরালো হচ্ছে। একসময় উত্তর-পূর্ব ভারতের কৃষি-বাণিজ্যের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ধূপগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেট যা বামফ্রন্ট সরকারের সৃষ্টি তা আজ অব্যবস্থা, অবৈধ দখলদারি ও তৃণমূল সরকারের চরম প্রশাসনিক উদাসীনতার চাপে কার্যত ধ্বংসের মুখে।
১৯৭৮ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগে ও বিধায়ক বনমালী রায়ের প্রচেষ্টায় প্রায় ৩০ একর জমিতে এই ঐতিহ্যবাহী বাজার গড়ে উঠেছিল। নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ পর্যন্ত এর পরিচিতি ছিল উত্তরবঙ্গের সেরা কৃষিপণ্য পাইকারি বাজার হিসেবে।
দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক গাফিলতি এবং পরিকল্পনাহীন বাজার ব্যবস্থাপনায় আজ বাজার নিয়ন্ত্রণহীন। বাজারের অবকাঠামো রাস্তা, শেড, ড্রেন সবই ভাঙাচোরা অবস্থায়। বাজারের জমি দখল করে অবৈধ ঘর তৈরি হচ্ছে। দালাল ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বাজারের মূল চরিত্র নষ্ট করেছে। বাজার কমিটির অফিস জলপাইগুড়িতে সরিয়ে নেওয়ায় স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ প্রায় নেই। 
স্থানীয় কৃষকদের ক্ষোভ সরাসরি তৃণমূল সরকারের দিকে। কৃষক আজিজ মিঞা বলেন,‘‘তৃণমূল সরকারের উদাসীনতায় বাজার আজ মৃতপ্রায়। ভেতরের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে, অবৈধ ঘর উঠছে। সবই শাসকদলের আশ্রয়ে।’’ আরেক কৃষক মজিন রায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘তৃণমূলের উন্নয়ন মানেই ধূপগুড়ির বাজার ধ্বংস। কৃষকের রুজি-রুটি বিপন্ন।’’
কৃষক সভার জেলা সম্পাদক প্রাণ গোপাল ভাওয়াল এই পরিস্থিতিকে ‘পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন,‘‘দখলদার ও প্রোমোটার রাজে বাজার কার্যত শেষ। অবিলম্বে অবৈধ দখল উচ্ছেদ, প্রোমোটার রাজ বন্ধ ও বাজার কমিটির অফিস ধূপগুড়িতে পুনর্বহাল করতে হবে। কৃষকদের বসার জায়গা ফিরিয়ে না দিলে আন্দোলন তীব্র হবে।’’
ধূপগুড়ির সবজি ব্যবসায়ী লক্ষণ ব্রহ্ম উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, আগে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, আসাম, বিহার, সিকিম সব জায়গা থেকে লোক আসত ধূপগুড়িতে। নোংরা পরিবেশ, ভাঙা রাস্তা ও দালালের চাপে পাইকার ও কৃষক কেউ ধূপগুড়িতে আসতে চাইছেন না। ফলে বাজার কার্যত শূন্য হয়ে যাচ্ছে। 

Comments :0

Login to leave a comment