মলয়কান্তি মণ্ডল ◾ রানিগঞ্জ
বাংলার ভবিষ্যৎ লুট হতে দেব না, লড়াইয়ের পথেই বাংলা তথা দেশ বাঁচাতে হবে। বাংলাকে বাঁচানোর জন্য জানকবুল লড়াই হবে। বামপন্থীরাই সেই লড়াইয়ের পথ দেখাবে। ডিওয়াইএফআই পশ্চিম বর্ধমান ২৪ তম জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে এ বার্তা দেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি।
শনিবার বিকেলে জেলার লড়াকু যুবদের ঢল নেমেছিল রানিগঞ্জ শহরে। সিহারশোল রাজবাড়ি মোড়ে সমাবেশ আছড়ে পড়ে ৬০ নং জাতীয় সড়কের আশেপাশে।
সমাবেশে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, পশ্চিম বর্ধমান জেলা সুকুমার ব্যানার্জি থেকে ভীমরাজ তেওয়ারিদের মতো শহীদদের লাশ কাঁধে নিয়ে দুর্নীতিবাজ, দুষ্কৃতীবাজের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। সারা পশ্চিম বর্ধমান জেলার কারখানা বন্ধ হচ্ছে। খনি বন্ধের চক্রান্ত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূলের নেতা, বিধায়ক ও সাংসদরা নীরব রয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলার বেকাররা কোথায় যাবে? গাঁয়ের শিংওয়ালা ছাগলের মতো বিজেপি তৃণমূলের ছদ্ম লড়াই চলছে। আরজি কর হাসপাতালে ছাত্রীকে ধর্ষণ ও নৃশংস খুনের পর তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি করেছে। সারা রাজ্যকে শ্মশানে পরিণত করেছে। ২৬ হাজার চাকরি চলে গেল। মেধাতালিকা সরকার দিতে পারছে না। ঘুষ না নিলে কেউ ঘুষ দিতে পারতো কি ? আসলে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারটাই অযোগ্য। এখন কে কার কথা শুনবে? জেলার ঐতিহ্যের শিল্পগুলি বন্ধ হয়ে গেছে। দিনদিন বেকার বাড়ছে। কাজের অভাবে ভিনরাজ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরছে। এখন মেধাবীরা টোটো কিনতে বাধ্য হচ্ছে। তিনি ২০ বছরের আগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন বামপন্থীরা একশো দিনের কাজ চালু করেছিল। বিজেপি ক্ষমতায় এসে সেই প্রকল্পের টাকা অর্ধেক করে দিয়েছে। তৃণমূল বালি, কয়লা মাফিয়াদের দৌরাত্ম বাড়ছে। বস্তি উচ্ছেদ করছে।
মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, দেশজুড়ে এখন ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিয়ে রুটি সেঁকতে চাইছে। সাধারণ যুব সমাজ ও গরিব মেহনতি মানুষেরা বিপদে পড়ছে। এসব নিয়ে মানুষকে আর ভাগ করা যাবে না। এখন লড়াই হবে, কাজের জন্য,ভাতের জন্য, চুরি দুর্নীতি রুখে দেওয়ার জন্য। বিজেপি তৃণমূল ডুবতে আর দেরি নেই। জেলা জুড়ে কাজের দাবিতে, অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে শপথ নেওয়ার জন্য সম্মেলন শুরু হয়েছে। সমাবেশে সমাজ বদলের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে লড়াইকে জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ডিওয়াইএফ আই রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, জেলা সম্পাদক ভিক্টর আচার্য। সভা পরিচালনা করেন সভাপতি বৃন্দাবন দাস।
শনিবার দুপুরে কয়লাশ্রমিক ভবনে পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের সূচনা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন জেলা সভাপতি বৃন্দাবন দাস। শহীদ স্মরণে মাল্যদান করা হয়। জেলার ২৭ টি লোকাল থেকে ২২৫ জন প্রতিনিধি উপস্থিত হয়েছেন। এদিন সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ধ্রুবজ্যোতি সাহা। মতাদর্শ চর্চা গড়ে তুলে রুটি রুজির আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানান। সম্মেলনে রাজ্যের যুবনেতা অয়নাংশু সরকার ও প্রদীপ পাণ্ডা সম্মেলনে উপস্থিত আছেন।
সম্মেলন স্থলের নামকরণ হয়েছে কমরেড সলিল দাশগুপ্ত মঞ্চ( কয়লা শ্রমিক ভবন) ও কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নগর( রানিগঞ্জ)। সম্মেলন চলবে রবিবার পর্যন্ত।
Comments :0