Elephant Maynaguri

এবার ময়নাগুড়ির লোকালয়ে ঢুকে পড়ল হাতি, ছড়ালো আতঙ্ক

জেলা

শনিবার সাতসকালে ময়নাগুড়ি শহর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি ঢুকে পড়ায়। সকাল থেকেই ময়নাগুড়ির পেটকাটি ও ব্যাংককান্দি এলাকায় দেখা যায় ওই হাতিটিকে। 
প্রথমে খাগড়াবাড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পেটকাটি রেলগেট এলাকায় লোকালয়ে ঢুকে পড়ে গজরাজ। গরুমারা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে কলা খাওয়া নদী পার হয়ে হাতিটি ঢুকে পড়ে জনবসতিপূর্ণ এলাকায়। সকাল থেকে মানুষের তাড়া খেয়ে হাতিটিকে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। ক্লান্ত হয়ে কিছুক্ষণ নদীর জলে দেহ ঠান্ডা করে পরে হাতিটি চলে আসে রেলগেট সংলগ্ন এলাকায়।
এদিন ময়নাগুড়ির এক নম্বর ওয়ার্ডেও হাতির দেখা মেলে। লোকালয়ে হাতি চলে আসায় মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকাজুড়ে। বহু মানুষকে গজরাজের তাড়া খেতে দেখা যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বন দপ্তরের রামসাই রেঞ্জ ও রামসাই মোবাইল স্কোয়াডের কর্মীরা। একই সঙ্গে আসে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ ও ময়নাগুড়ি পিপিএস (পিপল প্রোটেকশন স্কোয়াড)-এর সদস্যরা।
উত্তর খাগড়াবাড়ি এলাকায় খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হাতির হানায় জখম হন উত্তরবঙ্গ সংবাদের সাংবাদিক বাণীব্রত চক্রবর্তী। তাঁকে তড়িঘড়ি ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
এলাকায় হাতি দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমালেও প্রশাসন ও বন দপ্তরের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে থাকার অনুরোধ জানানো হয়। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, আপাতত হাতিটির গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং সূর্য পশ্চিমে ঢলে পড়লে তাকে জঙ্গলে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। 
কৃষক যতীন রায় বলেন, “রাতে ফসল পাহারা দিতে হয়। হাতিরা প্রায়ই ধান নষ্ট করছে, ক্ষতি হচ্ছে অনেক।” বন দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে গরুমারা ও জলদাপাড়ার জঙ্গলে খাদ্যাভাব বেড়ে যাওয়ায় হাতিরা চা-বাগান ও লোকালয়ের দিকে চলে আসছে।
গত এক মাসে ময়নাগুড়ি, মাদারিহাট, মেটেলি ও নাগরাকাটা ব্লকের একাধিক গ্রামে ছোট-বড় হাতির পাল হানা দিয়েছে। বনবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গে এবছর অন্তত ২৫টিরও বেশি হাতির হামলা হয়েছে। এতে শুধু ফসলের ক্ষয়ক্ষতিই নয়, মানুষের জীবনও বারবার ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
জঙ্গলে খাবারের অভাব, শস্যভরা মাঠ আর মানুষের ক্রমবর্ধমান জনবসতি— এই তিন কারণেই হাতিরা এখন বারবার লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। বন দপ্তরের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, খাদ্যের ভারসাম্য রক্ষা না হলে এই সংঘাত আরও বাড়বে, আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মানুষও, হাতিও।

Comments :0

Login to leave a comment