ভ্রমণ — মুক্তধারা, বর্ষ ৩
আমতা আমতা করে হামতা...
অভীক চ্যাটার্জী
বালুকা ঘেরা জায়গাটার নাম এসেছে এক দিগন্ত বিস্তৃত বালুকাবেলাকে কেন্দ্র করে। পাহাড়ের মাথায় এত বালি সচরাচর দেখা যায় না। এর আগে আমি দেখেছি লাদাখে। সেখানকার ঠাণ্ডা মরুভূমিতে ঘুরে বেড়ায় ব্যাকটেরিয়ান কামেল বা দুকুজো উট। যাক সে কথা।
তবে আমরা যখন বালুকা ঘেরা থেকে সকালের খবর খেয়ে বেরোলাম, আমার সেই লাদাখের নুবরা ভ্যালির কথাই মনে পড়ছিল। একটু সবুজের পরশ নিয়ে ঢুকলাম বালুকা ঘেরার বালিয়াড়িতে। কালচে বালির এই বালিয়াড়ির মধ্যে মধ্যে ছোট্ট নদীর নিস্তরঙ্গ স্রোত। জল জমেছে জায়গায় জায়গায়। এই বালিমাখা পথ ধরে আমাদের ক্যারাভান এগিয়ে চলল হাম্পটা পাসের দিকে। আজকের পথ অনেকটা কঠিন। আজ আমরা অনেকটা উচ্চতা অতিক্রম করব। হম্পটা টপ ১৪ হাজারেরও বেশি উচু। আমরা চলেছি ধীর পায়ে। আমাদের গাইড দেবরাজ বার বার বলছে পিছিয়ে পোড়ো না। এগোতে থাকো।
আমরা আজ ঢুকবো কুলু উপত্যকা থেকে স্পিতি উপত্যকাতে।হিমাচলের এই কুলু ভ্যালী যতটাই সবুজ, স্পিতি ভ্যালী ঠিক ততটাই ধূসর। অনেকটা লাদাখের মতো। আর আমরা এবার সেই অবস্থান্তরের দ্বারপ্রান্তে। সবুজের সমারোহ ধীরে ধীরে কমে আসছে আর তার জায়গা নিচ্ছে ধুলো ধূসর বৃষ্টিচ্ছায় স্পিতি উপত্যকার পাথুরে পথ চলা। মৌমাছিগুলো গা ঢাকা দিয়েছে অনেক আগেই। পথ আরও দুর্গম হয় উঠছে। ঠাণ্ডা আরও বেশি। শ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। চলা আরও দুরূহ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে একটা ছোট্ট ঘেসো জমি দেখে আমরা বিশ্রাম করতে বসলাম। পথ অনেক বাকি। কিন্তু চোখ তুলে উপরের দিকে তাকিয়ে আমাদের আত্মারাম খাঁচাছাড়া! এর পরের রাস্তা আর পাথর বা ঘাসের নয়। এর পর রাস্তা বরফের মধ্যে দিয়ে। তুষার রাজ্যে প্রবেশ করছি আমরা ।
চলবে
Comments :0