MANDA MITHAI — RAJ MONDAL — HEROSIMA - NAGASAKI — NATUNPATA | 10 AUGHST 2025, 3rd YEAR

মণ্ডা মিঠাই — রাজ মন্ডল — হিরোশিমা ও নাগাসাকি: ইতিহাসের এক মর্মান্তিক অধ্যায় — নতুনপাতা, ১০ আগস্ট ২০২৫, বর্ষ ৩

ছোটদের বিভাগ

MANDA MITHAI  RAJ MONDAL  HEROSIMA - NAGASAKI  NATUNPATA  10 AUGHST 2025 3rd YEAR

মণ্ডা মিঠাইনতুনপাতা

হিরোশিমা ও নাগাসাকি: ইতিহাসের এক মর্মান্তিক অধ্যায়
রাজ মন্ডল

নতুন বন্ধু

১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসে সংঘটিত হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে পরমাণু বোমা হামলা বিশ্ব ইতিহাসের এক মর্মান্তিক ও নৃশংস অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্তিম পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র এই দুই জাপানি শহরে পরমাণু বোমা ফেলে, যার ফলস্বরূপ লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয় এবং শহরদুটির একটি বিশাল অংশ ধ্বংস হয়ে যায়।

৬ আগস্ট ১৯৪৫ সালে সকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ‘এনোলা গে’ হিরোশিমা শহরে ‘লিটল বয়’ নামের প্রথম পরমাণু বোমাটি নিক্ষেপ করে। মুহূর্তের মধ্যে শহরটির একটি বড় অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। প্রায় ৭০,০০০ মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণ হারায় এবং পরবর্তীতে পরমাণু বিকিরণের কারণে আরও অনেকে মৃত্যুবরণ করেন। মাত্র তিন দিন পর, ৯ আগস্ট ১৯৪৫ সালে নাগাসাকিতে ফেলা হয় দ্বিতীয় পরমাণু বোমা ‘ফ্যাট ম্যান’। এতে আরও প্রায় ৪০,০০০ মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে নিহত হন এবং পরবর্তীকালে অনেকেই বিকিরণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

এই বোমা দুটি শুধুমাত্র তৎকালীন যুদ্ধের পরিণতি নয়, বরং মানবজাতির বিরুদ্ধে সংঘটিত এক ভয়াবহ অপরাধ হিসেবেও বিবেচিত হয়। যদিও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে যে, এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ দ্রুত শেষ করা এবং আরও প্রাণহানি রোধ করা, কিন্তু বহু ঐতিহাসিক মনে করেন, এটি ছিল জাপান ও বিশ্ববাসীর ওপর শক্তি প্রদর্শনের এক নির্মম দৃষ্টান্ত।

এই হামলার প্রভাব শুধু দুই শহরের ধ্বংস বা প্রাণহানি নয়, বরং এর দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল ছিল আরও ভয়াবহ। হাজার হাজার মানুষ ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হন। শহরগুলোর পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে যায় এবং বহু বছর ধরে সেসব এলাকায় স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব ছিল না। শিশুদের মধ্যে জন্মগত বিকলাঙ্গতা দেখা দেয় এবং বহু পরিবার চিরতরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

হিরোশিমা ও নাগাসাকির এই বেদনাদায়ক ঘটনা বিশ্বজুড়ে শান্তি ও নিরস্ত্রীকরণের প্রয়োজনীয়তাকে আরও জোরালো করে তোলে। এই ঘটনার পর থেকেই বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবি জোরালো হয়। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং শান্তিকামী মানুষ এই ঘটনার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন।

আজও প্রতি বছর ৬ ও ৯ আগস্ট হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নানা অনুষ্ঠান ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, যুদ্ধ কখনো শান্তির পথ হতে পারে না। হিরোশিমা ও নাগাসাকি শুধুমাত্র ইতিহাস নয়, বরং মানবতার একটি চরম শিক্ষা—যেখানে অস্ত্রের নয়, বরং সহানুভূতি, সমঝোতা ও শান্তির পথই হোক ভবিষ্যতের দিশা।।

ষষ্ঠ শ্রেণী, কল্যাণ নগর বিদ্যাপীঠ খড়দহ, কল্যাণ নগর, খড়দহ উত্তর ২৪ পরগনা
৮২৭২৯০৬৯৫৩
 

Comments :0

Login to leave a comment