কথা ছিল ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর এই একমাস সময়ের মধ্যে বিএলওরা বিএলএদের সাথে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইনুমারেশন ফর্ম দেবে। আবার সেই গুলো বাড়ি থেকে নিয়ে আসবে। যেমন কমিশনের নির্দেশ ছিল তেমন ভাবেই কাজ শুরু হয়। ৪ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএলওরা ফর্ম দিয়ে এসেছেন ভোটারদের বাড়িতে। এবার ভোটারদের কাজ ছিল তা পুরণ করা। বলে রাখা ভালো কমিশন একে বারে সব ফর্ম বিএলওদের দেয়নি। ৩০০ টা করে ফর্ম ধাপে ধাপে দেওয়া হয়েছে। মানে কোন পার্টে যদি ১২০০ ভোটার থাকে তবে সেই বিএলওকে চার ধাপে ফর্ম দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।
কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই তৈরি হয় নতুন সমস্যা। কমিশনের পক্ষ থেকে হঠাৎ করেই বিএলওদের জানানো হয় ফর্ম দেওয়া এবং নেওয়ার সাথে সাথে তাদের সেই ফর্ম গুলোকে আপলোডও করতে হবে সাইটে। কাজের চাপ বাড়ে বিএলওদের ওপর। এর সাথে সাধারণ মানুষের ওপরও তৈরি হয় চাপ।
উল্লেখ্য পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২ রাজ্যে এসআইআর-র ফর্ম জমা নেওয়ার ঘোষিত সময়সীমা ৪ ডিসেম্বর। বিএলও-দের তার আগে, ২৮ তারিখের মধ্যে, আপলোড করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, কোনও লিখিত নির্দেশ ছাড়াই এই চাপ দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ২৫ তারিখই ফর্ম জমা নিয়ে নিতে বলা হচ্ছে।
অনেক মানুষ যারা ফর্ম পুরণ করতে পারেন না, বা কোন সমস্যা হচ্ছে তাদের তখন বিভিন্ন জায়গায় ভীড় জমাতে হলো ফর্ম পুরণ করার জন্য। শুধু ফর্ম পুরণ নয়, ২০০২ সালের তালিকায় নাম আছে কি না? সেই নিয়েও চিন্তা রয়েছে। মানুষকে এই আতঙ্ক থেকে বাঁচানোর জন্য রাজ্য জুড়ে ভোটার সহায়তা কেন্দ্র করেছে সিপিআই(এম)। ২০০২ সালের তালিকা পার্ট এবং বিধানসভা ভিত্তিক যেমন সেখানে পাওয়া যাচ্ছে তমন ভাবে মানুষকে সহায়তাও করা হচ্ছে ফর্ম পুরণ করার জন্য।
এবার তো ফর্ম পুরণ হলো। কিন্তু বিএলও কবে আসবে? কারণ তার কথা বাড়ি থেকে সেই ফর্ম তোলা। কিন্তু না বিভিন্ন জায়গায় এমনকি কলকাতায় দেখা যাচ্ছে বিএলওরা কোন একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বসছেন সেখানে এসে ‘লাইন’ দিয়ে এসআইআরের ফর্ম জমা করতে হচ্ছে সাধারণ ভোটারদের। অনেক জায়গায় অনেকে এই কাজের প্রতিবাদও করেছেন। তাদের কথা বিএলও বাড়ি থেকে এসে ফর্ম না নিয়ে গিয়ে কেন নির্দিষ্ট একটি জায়গায় বসছেন। বিএলওদের যুক্তি তাদের কাছে ইআরওদের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোন জায়গায় বসে তারা সেই এলাকার ফর্ম জমা নিতে পারবেন। যদিও এই নির্দেশিকার কোন লিখিত নথি এখনও দেখাতে পারেননি বিএলওরা। আর এর ফলে বহু মানুষ বিশেষ করে যারা বয়স্ক তাদের পড়তে হচ্ছে সমস্যায়। লাইন দিয়ে জমা দিতে হচ্ছে ফর্ম।
উল্লেখ্য পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২ রাজ্যে এসআইআর-র ফর্ম জমা নেওয়ার ঘোষিত সময়সীমা ৪ ডিসেম্বর। বিএলও-দের তার আগে, ২৮ তারিখের মধ্যে, আপলোড করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, কোনও লিখিত নির্দেশ ছাড়াই এই চাপ দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ২৫ তারিখই ফর্ম জমা নিয়ে নিতে বলা হচ্ছে।
রাজ্যে এসআইআর পর্বে কয়েকজন বিএলও কাজের চাপে আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনার গুলোর ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী কমিশনকে নিশানা করেছেন। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মুখ্য আধিকারিক জ্ঞানেশ কুমার জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের কাছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ডেটা এন্ট্রি করার জন্য কর্মী চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোন আধিকারিককে সেই কাজে নিযুক্ত করা হয়নি।
তবে বিএলওরা এসআইআরের কাজ নিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তারা বার বার দাবি করে এসেছে ফর্ম আপলোড করার কাজ তাদের নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএলও বলেন, ‘‘সারা দিন ধরে আমরা ফর্ম জমা নিচ্ছি। সেই গুলো মিলিয়ে দেখতে হচ্ছে ঠিক আছে কি না। ভুল থাকলে ঠিক করতে হচ্ছে। তারপর ইআরও দপ্তর বলছে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ টা করে ফর্ম আপলোড করতে হবে। অ্যাপের মাধ্যমে সেই কাজ করতে হচ্ছে আমাদের।’’ তিনি বলেন, সার্ভারের সমস্যা থাকায় এক এক সময় ফর্ম আপলোড করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। কাজ ঠিক ভাবে করা যাচ্ছে না।
ওই বিএলও জানান, ফর্মে যেই কিউআর কোড দেওয়া আছে আপলোডের সময় তা স্ক্যান করতে হচ্ছে। তারপর সেই ভোটারের সব তথ্যের সাথে ফর্মে দেওয়া তথ্য মেলাতে হচ্ছে। যদি কারুর ২০০২ সালের তালিকায় নাম না থাকে তবে তার ক্ষেত্রে পরিবারের যেই সদস্যার নাম সে দিয়েছে তার সাথে সেই তথ্য নতুন করে বিধানসভা ধরে মেলাতে হচ্ছে। এক কথায় এক একটা ফর্ম আপলোড করতে কম করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগছে।
তার কথায় তাদের প্রশিক্ষণের সময় আপলোডের কথা বলা হয়নি। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় নতুন নতুন নিয়ম ইআরও দপ্তরের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পাঠানো হচ্ছে যার জেরে প্রতিদিন সমস্যা বাড়তে থাকছে।
SIR BENGAL
কমিশনের খাম খেয়ালি পনায় সমস্যায় সাধারণ ভোটার থেকে বিএলও’রা
×
Comments :0