এখন বন্ধ ডানলপ, সে সময় যারা টায়ার তৈরি করতেন সেই শ্রমিকদের মধ্যে এখন হতাশা।
১৯৯৮ সালে হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানা ছাবারিয়া গোষ্ঠীর হাতে থাকার সময় বন্ধ হয়েছিল। ৯৯ সালে কার্গিলে যু্দ্ধ লাগে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের। ডানলপ কারখানাতে সেই সময় একমাত্র এরো টায়ার তৈরি হত। ওটিআর বা অফ দা রোড টয়ারও তৈরি হতো।
যুদ্ধ বিমানে এরো টায়ার ব্যবহার হতো। আবার ট্যাঙ্কার, বোফর্স কামানের জন্য ওটিআর লাগত।
ডানলপে উৎপাদন বন্ধ। কিন্তু কারখানার ভিতরে টায়ার রয়েছে অনেক। প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজকে নির্দেশ দেন ডানলপ থেকে সামরিক টায়ার নিয়ে যেতে। সেই মতো ভারতীয় বায়ু সেনা ডানলপ থেকে টায়ার নিয়ে যায়।
এরো টায়ার তৈরি করতেন ডানলপ শ্রমিক মধু শর্মা। তিনি বলেন, ‘সে সময় কারখানা বন্ধ শ্রমিকদের অবস্থা খারাপ। তা সত্ত্বেও যুদ্ধের জন্য আমরা টায়ার দিয়েছিলাম। প্রথমে শ্রমিকরা রাজি ছিল না। কিন্তু রাজ্যের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত বলেছিলেন দেশের স্বার্থ আগে। তাই সেদিন কারখানার গেট খুলে টায়ার বের করে দেওয়া হয়েছিল। এয়ার ফোর্সের জওয়ানরা ট্রাক ভরে টায়ার নিয়ে গিয়েছিল। আমরা গর্বিত হয়েছিলাম সরাসরি যুক্ত না হয়েও টায়ার তৈরি করে পরোক্ষ ভাবে যুদ্ধের শরিক হতে পেরে। তবে সেই ডানলপ কারখানার শুধু কঙ্কাল সার জমিটাই পড়ে আছে আর কিছুই নেই। এখনকার সরকার ডানলপের জন্য ভাবেনি।’
ডানলপ শ্রমিক অসীম কুমার বসু বলেন, ‘দেশের স্বার্থ সবার আগে আমরা দেখেছিলাম। কারখানা বন্ধ, শ্রমিকরা বেতন পায় না। তা সত্ত্বেও আমরা কারখানা থেকে টায়ার দিয়েছিলাম। এয়ার ফোর্স এর বড় অফিসাররা এসে সেই টায়ার নিয়ে যান। এয়ার ক্রাফটের টায়ার শুধু নয় নৌসেনার জন্য জাহাজের ভি বেল্টও যোগান দিত ডানলপ। সেই ডানলপ লিকুইডেশানে চলে যাওয়ার পর আর কিছু অবশিষ্ট নেই। আমরা চাই সম্প্রীতি থাকুক। দেশ বাঁচুক, মানুষ বাঁচুক।’
Comments :0