ভ্রমণ — মুক্তধারা, বর্ষ ৩
আমতা আমতা করে হামতা...
অভীক চ্যাটার্জী
আমাদের আনন্দ খুব শীঘ্রই হতাশায় পর্যবসিত হলো, যখন দেখলাম আমরা এখনো অনেকটা দূরে রয়েছি, আর ছাত্রু ক্যাম্প সাইটে পৌঁছতে একটা খাড়া পাহাড়ের গা বেয়ে নিচে নামতে হবে। আবার খাড়া পাহাড়, আবার সেই ঝুরো মাটি। আবার পাথরে পাথরে পা ফেলে খুব ধীর গতিতে একটু একটু করে নামতে লাগলাম আমরা। স্পিতি উপত্যকার পাহাড়ের ঝুরো মাটিতে ফুটেছে বিভিন্ন নাম না জানা ঘাসফুল। হরেক রং তার পথের শোভা আরও বাড়িয়ে তুলছে। আমরা সেই পথে একটু একটু করে এগুলিয়ে চললাম শম্বুর গতিতে।
এক জায়গাতে এসে বুঝলাম এবার পড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। আমাদেরই দলের আর এক সহযাত্রীর, নাম তার আলী, সে এই পাহাড়ি রাস্তায় বেশ সাবলীল, কারণ তার কৈশোর কেটেছে নাগাল্যান্ডের পাহাড়ের কোলে, সে এসে আমার হাত ধরলো। আমি একটু একটু করে নামতে লাগলাম এবং শেষ করলাম আমাদের শেষ দিনের শেষ পাহাড়ি পথ। এবার সোজা হেঁটে গেলেই পৌঁছনো যাবে ছাত্রু ক্যাম্প সাইটে।
আরও এক ঘন্টা রুক্ষ পাথরের পথ হাঁটার পর আমরা শেষে পৌঁছলাম ছাত্রু ক্যাম্প সাইটে। সত্যি কথা বলতে এই ক্যাম্প সাইট আমায় হতাশ করেছে। শুধু ধুলো আর মাটি উড়ছে সেখানে। পাহাড় সেখানে যেন তুষের চাদর ঢেকে রেখেছে। বড্ড বেমানান আগের ক্যাম্প সাইটগুলোর থেকে। তবু বিষন্নতা নিয়েই তাবুতে ঢুকলাম আমরা।খুব খিদে পেয়ে গেছে। এবার কিছু খেতে হবে।
দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা তৈরি হলাম চন্দ্রতাল যাওয়ার জন্য। এই ছাত্রুর মূল আকর্ষণই হলো এই চন্দ্রতল। পাহাড়ের এত উচ্চতায় এই হ্রদ বহুকাল ধরে বহু পর্যটকের চিত্তাকর্ষণ করে আসছে। আমার বহুকালের ইচ্ছে ছিল এই হ্রদের সামনে দাঁড়ানোর। দুটো বোলেরো গাড়িতে চড়ে আমরা চললাম চন্দ্রতাল দেখতে।
চলবে
Comments :0