GDP

৯.৭% ছিল দু’বছর আগেও, জুলাই-সেপ্টেম্বরে বৃদ্ধি ৮.২%

জাতীয়

দু’বছর আগে একই পর্বে মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) প্রকৃত বৃদ্ধির হার ছিল ৯.৭ শতাংশ। চলতি অর্থবর্ষের জুলাই-সেপ্টেম্বরে সেটিই নেমে হয়েছে ৮.২ শতাংশ। তাকেই সাফল্যের বিরাট সূচক ঘোষণা করে প্রচারে নেমে পড়ল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
শুক্রবার জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রক। প্রকৃত বৃদ্ধির হার, দামের ওঠানামা বাদ দিয়ে, ৮.২ শতাংশে দাঁড়াবে বলে অনুমান করছে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রক। প্রকৃত জিডিপি বৃদ্ধির এই হার গত ছয়টি ত্রৈমাসিকে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু দু’বছর আগের তুলনায় যে কমেছে হার, তা চেপে যাচ্ছে এই প্রচার। 
সরকারি তথ্য অনুযায়ী চলতি মূল্যে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৮.৭ শতাংশ। যার অর্থ, এই হিসেবে মূল্যবৃদ্ধির হার ০.৫ শতাংশের আশেপাশে ধরা হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির হার এত কম ধরা হয়েছে কেন সে প্রশ্ন তুলছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ঈশিতা মুখার্জি বলছেন, ‘‘এমনিতেই সব হিসেব করা হচ্ছে ২০১১-১২ ভিত্তিবর্ষ ধরে। সে বছর দামবৃদ্ধির হার ছিল অস্বাভাবিক চড়া। ফলে সেটিকে ভিত্তি ধরলে অন্য বছরের হিসেবের সঙ্গে বাস্তব অভিজ্ঞতা মিলছে না।’’ 
এই অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হারের অনুমান ছিল ৭.৭ শতাংশ। এর আগের তিন মাস, এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে, প্রকৃত বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৮ শতাংশ।
গত আর্থিক বছর, ২০২৪-২৫’র এই একই পর্বে বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৬ শতাংশ। 
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কারখানা উৎপাদন বৃদ্ধির হার গত বছরে এই ত্রৈমাসিকের তুলনায় ৯.১ শতাংশ এবং নির্মাণ ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ৭.২ শতাংশ। আর্থিক ক্ষেত্র, আবাসন ক্ষেত্রে লেনদেন এবং পেশাদারি পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ১০.২ শতাংশ। 
এই হিসেব দেখিয়ে অধ্যাপিকা মুখার্জি বলছেন, ‘‘কারখানা উৎপাদনে যদি বড় বৃদ্ধি হয় তা’হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও আনুপাতিক বৃদ্ধি হওয়ার কথা। বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং সংশ্লিষ্ট পরিষেবায় বৃদ্ধির হার মাত্র ৪.৪ শতাংশ কেন? খনি ক্ষেত্রে উৎপাদন ০.০৪ শতাংশ কমেছে ধরা হচ্ছে।  তথ্যগুলির সঙ্গে কারখানা উৎপাদনে বৃদ্ধির তথ্যের ব্যাখ্যা থাকছে না।’’ 
সরকারি হিসেবেই বলা হয়েছে যে কৃষি এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ৩.৫ শতাংশ। সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে যে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বাদ দিয়ে ব্যক্তিগত ভোগব্যয়ে প্রকৃত বৃদ্ধির হার ৭.৮ শতাংশ। ধান উৎপাদনে বৃদ্ধির হার ২.১ শতাংশ ধরা হয়েছে।  
তথ্যে দেখানো হয়েছে যে রিয়েল এস্টেট, ব্রডকাস্টিং ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের ওপর। আর্থিক ক্ষেত্রে বৃদ্ধি ১০.২ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, ফাটকা পুঁজি বিনিয়োগ হয় এমন ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি হয়েছে লেনদেন। তাকেই সাফল্য বলে প্রচার চলছে।

Comments :0

Login to leave a comment