মুক্তধারা
গল্প
হেমন্তের পথে
-----------------------------
রাহুল চট্টোপাধ্যায়
-----------------------------
২৩ নভেম্বর ২০২৫, বর্ষ ৩
একটা রাত্তির পেরোয় নি জীবন ঘরে ফিরেছিল। কিন্তু হঠাৎ মাঝরাতেই সে চলে গেছে। কি একটা শব্দে সরলার ঘুম ভেঙে গেছে। ডাক দেয় সে-' ও পাঁচুর বাবা, শুনতে পাচ্ছো?
বারবার ডেকেও সাড়া না পেয়ে টিমটিমে কুপিটার আলো উসকে দিয়ে দেখে পাঁচুর বাবা কোথাও নেই।ধড়মড় করে বিছানা ছেড়ে উঠে কাপড়টা সামলে বাইরে দাওয়ায় এসে দাঁড়ায়। চারিদিকে তাকিয়ে দেখে । কোথাও নেই পাঁচুর বাবা। কি করবে সরলা।ছেলেটাও নেই।সেই কবে ভিন্ দেশে গেছে কাজ নিয়ে।একা মেয়েমানুষ সে , কোথায় খুঁজবে! ভাবতে ভাবতে জোরে জোরে ডাকতে থাকে সে। তার ডাক অন্ধকার থেকে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে ।তার ডাকে রাতপেঁচাগুলো ডেকে উঠে চিরে দেয় অন্ধকারে গভীরতাকে।
জীবন ততক্ষণে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে।আলপথ বেয়ে নদীর খেয়াঘাটে। নোঙর খুলে নৌকা ভাসিয়ে দিল নদীতে। ওপারে ভোরবেলা থেকেই তাদের জমায়েত। ভিডিও অফিসের সামনে। সারাদিন। বাঁধ মেরামতের দাবিতে।
ভোররাতে নৌকা চালাতে চালাতে মনটা খারাপ করে,সরলাকে না বলেই চলে এসেছে সে।ঘুমন্ত বউটাকে ডাকতে মায়া হয়েছিল।
ওদিকে সরলাও মাঠ পেরিয়ে নদীর কাছে চলে এসে দেখে জীবনের নৌকা নেই।তখন কিছুটা স্বস্তি পায়,মনে হয় একদিন সে যেন বলেছিল ' রোববার থাকবো না, ভিডিওয় মিটিং আছে'।
তখন ভোর হচ্ছে হবে।প্রথম আলোয় সরলার মুখখানা জ্বলজ্বল করে ওঠে।
Comments :0