কেরালায় পঞ্চায়েত ও পৌরসভা ভোটে গতবারের তুলনায় আসন কমেছে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের। অন্যদিকে আসন বেড়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ’র। তিরুবনন্তপুরম কর্পোরেশনে জয়ী হলেও রাজ্যে বড় কোনও প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি।
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক এমভি গোবিন্দন বলেছেন যে নির্বাচনী ফলাফল খতিয়ে বিশ্লেষণ করবে পার্টি।
সে সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘অতীতে এমন হয়েছে যে বামপন্থীরা নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পর ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’’
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফলাফল এবং প্রবণতায় দেখা যাচ্ছে ৬টি কর্পোরেশনের মধ্যে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট জয়ী ১টিতে। ৪টিতে জয়ী ইউডিএফ এবং বিজেপি জয়ী হয়েছে ১টিতে।
৮৬টি পৌরসভার মধ্যে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট জয়ী হয়েছে ২৮টিতে। কংগ্রেস জোট ইউডিএফ জয়ী ৫৪টিতে। বিজেপি জোট জয়ী কেবল ২টি পৌরসভায়।
পঞ্চায়েতে জেলা স্তরে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট জয়ী ৭টিতে। কংগ্রেস জোটও ৭টিতে জয়ী। বিজেপি কোনও জেলা পরিষদে বোর্ড গড়তে পারছে না।
ব্লক পঞ্চায়েত স্তরে ১৫২টির মধ্যে ৬৩টিতে জয়ী এলডিএফ। ৭৯টিতে জয়ী কংগ্রেস জোট। বিজেপি কোনও ব্লক স্তরে বা পঞ্চায়েত সমিতির কর্তৃত্ব নেওয়ার অবস্থায় এখনও নেই।
গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ৯৪১টির মধ্যে বাম জোট জয়ী ৩৪৯টিতে। ৪৯৫টিতে বোর্ড গড়ছে কংগ্রেস জোট। ২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী বিজেপি।
তবে জাতীয় স্তরে সংবাদমাধ্যম এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমন প্রচারে নেমেছেন যেন বাকি দুই শক্তিকে দুরমুশ করে দিয়েছে বিজেপি!
গোবিন্দন মনে করিয়েছেন যে ২০১০’র পঞ্চায়েত-পৌরসভা ভোটে মাত্র ছয়টি জেলায় জয়ী হয়েছিল বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট। কিন্তু তারপরই বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফলে অনেক বদল হয়। ২০১১’র বিধানসভা নির্বাচনে এলডিএফ পরাজিত হলেও মাত্র ২ আসনের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ।
সংবাদমাধ্যমে প্রচারেরও কড়া বিরোধিতা করেছেন গোবিন্দন। তিনি বলেছেন, এই ফলাফলে মোটেই প্রমাণ হয় না যে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট তার জনভিত্তি হারিয়ে ফেলেছে।
বিজেপি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, কেবল তিরুবনন্তপুরমে বিজেপি জয়ী হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের অন্যত্র দাগ কাটতে ব্যর্থ হয়েছে।
উল্লেখ্য, পান্ডলম পৌরসভা বিজেপি’র হাতছাড়া হয়েছে। এই পৌরসভায় বোর্ড ছিল বিজেপি’র। পালাক্কাদ পঞ্চায়েতেও গরিষ্ঠতা খুইয়েছে বিজেপি।
গোবিন্দন বলেছেন, কল্যাণমূলক খাতে একগুচ্ছ প্রকল্প চালাচ্ছে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সরকার। সম্প্রতি কেরালা চরম দারিদ্রমুক্ত রাজ্য ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে এই প্রয়াসের প্রতিফলন পড়ল না কেন তা খতিয়ে দেখা হবে। সাংগঠনিক ত্রুটি থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে। জনতার বক্তব্য কী, ফের তা জানা হবে। জনতার কাছে যাওয়া হবে। ত্রুটি সংশোধন ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। তাকে জারি রাখা হবে।
উল্লেখ্য। ত্রিশূরে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের নির্বাচনী সমর্থন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়েছে। জেলার সাতটির মধ্যে পাঁচটিতে জয়ী হয়েছে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট। কান্নুরে আধিপত্য ধরে রেখেছে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত মুন্ডাক্কাই-চোরামালার বিভিন্ন আসনে জয়ী হয়েছে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট।
Kerala Local Bodies
কেরালায় পৌরসভা-পঞ্চায়েত ভোটে এগিয়ে কংগ্রেস
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক এমভি গোবিন্দন।
×
Comments :0