বইকথা
একগুচ্ছ গল্পের মেলা
প্রদোষকুমার বাগচী
নতুনপাতা
এবার তোমাদের জন্য একটা মনপসন্দ গল্পের বইয়ের কথা বলবো। বেশি বড় বই এটা
নয়। ছোট ছোট কয়েকটি গল্প একসাথে করে বইটি ছাপানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৭টি
গল্প। একদিনেই শেষ করে দেওয়ার মতো। তোমাদের ভালো লাগবে। গল্প গুলি সবই
আলাদা আলাদা। কোনও আগে পরে নেই। তাই তোমরা যেটা ইচ্ছা সেটা আগে পড়ে নিতে
পারো। আমি প্রথম গল্পটা পড়েই তো মুগ্ধ হয়ে গেছি। গল্পের নাম ‘আদর্শ মায়ের
পুরস্কার’। এই গল্পে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে প্রধান চরিত্রে। তাঁদের নাম
নীলু ও মুনিয়া। তাঁরা ছোটবেলা থেকে বন্ধু। মেয়েটির স্কুলে একটি অনুষ্ঠান হচ্ছে। সেই
অনুষ্ঠানে বৃক্ষ বিতরণ করা হবে। সেখানে সবাই যাবে। মুনিয়া নীলুকে ধরেছে সেই
অনুষ্ঠানে যাবার জন্য। নীলু কি করে যাবে? ওরা খুব গরিব। জামা ছেঁড়া, প্যান্ট ছেঁড়া।
ওসব পড়ে গেলে মুনিয়ার সম্মান থাকবে না যে। তাই ও যাবে না। তখন মুনিয়া নীলুর
বাড়িতে এসে তার মায়ের অনুমতি নিয়ে তার দাদার জামা কাপড় তাকে পড়তে দেয়।
অগত্যা ওই জামাকাপড় পড়ে মুনিয়ার সঙ্গে নীলুও চলে যায় বৃক্ষরোপণ উৎসব দেখতে।
সেখানে চারা গাছ বিতরণ করছে দিদিমনিরা। তাই দেখে ওর হাসি এসে যায়। এক দিদিমনি
তা দেখে ফেলে এবং তাকে মঞ্চে ডেকে বলে তুমি কেন হাসছিলে বলো। নীলু তো ভয় পেয়ে
যায়। তবুও সে বলে যাদের গাছ দিচ্ছেন তারা থাকে ফ্ল্যাটে। তারা টবে গাছ লাগায়।
কিন্তু এগুলো বড় বাগানে খোলা মেলা জায়গায় লাগাতে হয়। তাছাড়া এর জন্য যে জল
দিতে হবে তা ফ্ল্যাটে পাওয়া যাবে কি করে। এমনিতেই জল সংকট। মানুষ যেভাবে জল
নষ্ট করছে তাতে বিপদ বাড়বে। এসব নিয়ে এক্ষুনি সচেতন হতে হবে। প্রত্যেক
মানুষকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে। নীলুর কথায় প্রত্যেকে হাততালি দিয়ে ওঠে। দিদিমণিও
অবাক নয়নে চেয়ে থেকে বলেন, তোমাকে এসব কে শেখালো। নীলু বলে আমার মা। আমার
মা যখন বাড়ির বাইরে কাজ শেষ করে ফেরে এবং আমার পাশে শোয় তখন মা আমাকে কত
কথা বলে। মানুষ হওয়ার কথা। মান আর হুঁশের কথা।
দিদিমনি তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরে একটা মিষ্টির প্যাকেট ধরিয়ে দেয়। নীলু বলে, ওটা
নিয়ে কি হবে? দিদিমনি বলে, ওটা তোমার নয়, তোমার জন্য আলাদা আছে। ওটা তোমার
মায়ের। এটা একজন আদর্শ মা’য়ের পুরস্কার।
এরকমই সব গল্প আছে এই বইটিতে। যেমন— মুন্নি আমাদেরও মেয়ে, স্বর্ণ,
ভোকাট্টা, বাবু দুটো পয়সা দেবেন, সাারপ্রাইজ, বাজনদার ইত্যাদি। তবে এই বইটির
নাম করা হয়েছে বাজনদার। গল্পটি শুনতে চাও? তাহলে এবার বইটি জোগার করে ফেলো।
বাজনদার
মানস সরকার। দোয়েল পত্রিকা। মাটির বাড়ি, ওঙ্কার পার্ক, ঘোলা বাজার,
কলকাতা—৭০০০ ১১১। ১৭৫ টাকা।
Comments :0