নতুনপাতা : জানা অজানা
রবীন্দ্রনাথের রাখিবন্ধন উৎসব
তপন কুমার বৈরাগ্য
রাখীবন্ধন একটা পবিত্র উৎসব।বোন ভাইয়ের হাতের
কব্জিতে এই রাখি বেঁধে দেয়।মনে মনে কামনা করে
ভাইয়ের মঙ্গল।মহাভারতে আমরা দেখতে পাই দ্রোপদী
কৃষ্ণের হাতে শ্রাবণমাসের পূর্ণিমার দিন রাখী পরিয়ে দেন।
যমের বোন যমুনাও যমের হাতে রাখী পরিয়ে দেন।
ইতিহাসে দেখতে পাই রাজপুত রমণী কর্ণাবতী হুমায়ুনকে
শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হলে হুমায়ুনকে রক্ষার আহ্বান
জানিয়ে রাখী পাঠিয়েছিলেন।কিন্তু শেষ পর্যন্ত হুমায়ুন
কর্ণাবতীকে জহরব্রতের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন
নি।এই রাখীবন্ধন উৎসব ভাই বোনের পবিত্র ভালোবাসার
উৎসব।
কিন্তু রবীন্দ্রনাথের রাখীবন্ধন উৎসব বঙ্গভঙ্গ রোধ করা।
হিন্দুমুসলমানের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বকে দৃঢ় থেকে
দৃঢ়তর করা। রবীন্দ্রনাথ মনে প্রাণে অবিভক্ত বাংলাকে
চায়তেন। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২০শে জুলাই গভর্ণর জেনারেল
ও ভাইসরয় লর্ড জর্জ নাথানিয়েল কার্জন বঙ্গভঙ্গের কথা
ঘোষণা করেন। এর বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ রুখে দাঁড়ান।
রবীন্দ্রনাথও পথে নামলেন।মানবতার পূজারী রবীন্দ্রনাথ
৩০শে আশ্বিন কলকাতার রাস্তায় নামলেন।হিন্দু-মুসলমান
দলমত নির্বিশেষে রবীন্দ্রনাথের নির্দেশে পরস্পর পরস্পরের
হাতে রাখী পরিয়ে দিলেন। এই রাখীবন্ধন উৎসবকে স্মরণ করে
রবীন্দ্রনাথ লিখলেন --বাংলার মাটি,বাংলার জল,
বাংলার বায়ু,বাংলার ফল পুণ্য হোক,পুণ্য হোক,পুণ্য
হোক হে ভগবান।
দলে দলে স্ত্রী পুরুষ ছাত্র ছাত্রী এগিয়ে এলো।রক্ষাবন্ধন
হিসাবে পরস্পরের হাতে পরিয়ে দিলেন হলুদ সুতো।
হলো মানবিকতা,সম্প্রীতি একতার জাগরণ।
যা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে।১৯১১খ্রিস্টাব্দে
বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়।
Comments :0