বইকথা
স্বাধীনতা দিবসে বীর বিপ্লবী ক্ষুদিরামের জীবনকথা
প্রদোষকুমার বাগচী
নতুনপাতা
আজ ১৫ আগস্ট ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস। দুশো বছর ধরে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির
বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীন হয়েছে দেশ। হাজার হাজার মানুষ সেই লড়াইয়ের সঙ্গে নানা
সময় নানাভাবে যুক্ত ছিলেন। এই সংগ্রামে যুক্ত হয়ে অনেকে শহিদের মৃত্যু বরণ
করেছেন। তাঁদের আত্মবলিদানের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের পথ চওড়া হয়েছে।
আজ সেই শহিদের মধ্যেই একজনের কথা তোমাদের বলবো, যাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে
লেখা হয়েছিল গান— ‘একবার বিদায় দে মা, ঘুরে আসি।’
তোমরা নিশ্চয়ই সকলে বুঝতে পারছো যে কোন শহিদের কথা আমি বলছি। তোমরা ঠিকই
ধরেছো যে আমি তোমাদের শহীদ ক্ষুদিরামের কথা বলছি। তাঁর জীবন ও শহিদীবরণকে
কেন্দ্র করে অনেক বই লেখা হয়েছে। আরও লেখা হতে থাকবে। কিন্তু আমি যে বইটির
কথা বলছি সেটা তোমাদের উপযোগী করে লেখা। বইটির নাম ‘অগ্নিকিশোর ক্ষুদিরাম’।
১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট মজফ্ফরপুরের জেলে ১৮ বছর ৮মাস ৮দিন বয়সে তাঁর ফাঁসি
হয়েছিলেন। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনও এক চারণ কবি গেয়ে উঠেছিল সেই
গান— ‘একবার বিদায় দে মা, ঘুরে আসি’। এটা কি একটি গান শুধু? তার বেশি কি কিছু
নয়? বরং বলা যায় এটি গান তো বটেই কিন্তু এর মধ্যে শোনা যায় যুগের প্রতিধ্বনি। সে
যুগের নাম অগ্নিযুগ।
জন্মেছিলেন ১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর। দারিদ্রক্লিষ্ট পরিবার থেকে উঠে এসেছিলেন।
কিন্তু দেশের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিতে সংকল্পবদ্ধ ছিলেন। ভাল বাঁশি বাজাতে
পারতেন। শক্তিও ছিল দেহে। সেই সময়টা ছিল ‘স্বদেশী’ যুগ। স্বদেশী কাপড় পড়তে
উৎসাহিত হয়েছিলেন ক্ষুদিরামও। পরে জনাকয়েক জাতীয়তাবাদী নেতার সঙ্গে
যোগাযোগ হয়। দেশকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত করার সংকল্প নেন। হয়ে ওঠেন
বিপ্লবী। স্বাধীনতা সংগ্রামে তখন দেশের অনেকে নেমে পড়েছেন। তিনিও নেমে পড়েন
মাতৃভূমিকে মুক্ত করার কাজে। তিনি বুঝে নিয়েছেন ইংরেজরা অপরাজেয় নয়। ধীরে ধীরে
ক্ষুদিরাম হয়ে উঠলেন প্রশিক্ষিত বিপ্লবী।সংগঠন গড়ার কাজে যুক্ত হলেন। একদিন
ক্ষুদিরাম দায়িত্ব পেল মজফফরপুরে কিংসফোর্ডকে হত্যা করার। সঙ্গী হলেন
প্রফুল্ল চাকী। এর পর যে কি হয়েছিল অর্থাৎ ক্ষুদিরামের কি হলো, প্রফুল্লরই বা
কি হলো্, কেন সব সময় ক্ষুদিরাম প্রফুল্লকে দীনেশ রায় নামে জানতো, আর প্রফুল্ল
চাকীই বা ক্ষুদিরামকে হরেন সরকার বলে জানতো— এসব কথা নিশ্চয় তোমাদের
জানতে ইচ্ছা করছে। একথাও নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করছে যে ক্ষুদিরাম কি
কিংসফোর্ডকে বোমা মেরে খতম করতে পেরেছিল না ব্যর্থ হয়েছিল, কিংসফোর্ডের
পরিবর্তে যদি কেউ মারা গিয়ে থাকে তার নাম কি— এসব জানতে বইটি তোমাদের পড়তে
হবে। ক্ষুদিরামের তো ফাঁসি হয়েছিল তোমরা জানো, কিন্তু একথা কি জানো
গ্রেফতারের পর ক্ষুদিরামের স্বীকারোক্তি কি ছিল? সেকথঅ জানতে হলে পড়তে হবে
বইটি।
অগ্নিকিশোর ক্ষুদিরাম
লেখক জলধর মল্লিক
ন্যশনাল বুক এজেন্সি। কলকাতা—৭৩
৪০টাকা।
Comments :0